All news

৫ ইউপি নিরাপত্তার চাদরে

৫ ইউপি নিরাপত্তার চাদরে

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার আওতাধীন ৫টি ইউনিয়নকে ২০০ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কেরানীগঞ্জের সেমন্তী কনভেনশন হলে এই কর্মযজ্ঞের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ঢাকা জেলা পুলিশের উদ্যোগে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে পৃষ্ঠপোষকতা করছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষে তার সেক্রেটারি, বসুন্ধরা গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক মাকসুদুর রহমান ১০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেন। চেক গ্রহণ করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার)। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মধ্য দিয়ে ঢাকার উপকণ্ঠ কেরানীগঞ্জের বিশাল একটি জনপদ নিরাপত্তার চাদরে চলে আসছে। রাজধানীর পাশের উপজেলা হওয়ায় বিভিন্ন সময় এখানে নানা অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। সিসিটিভি নজরদারির আওতায় এলে অপরাধপ্রবণতা অনেকাংশেই লাঘব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপমহাপুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহীন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ম. ই. মামুন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহজামান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সেক্রেটারি ও নির্বাহী পরিচালক মাকসুদুর রহমান, চিফ প্রটোকল অফিসার মেজর (অব.) মোহসীনুল হাকিম, একান্ত সচিব এমডি আমিনুল ইসলাম, ফেরদৌস বিন সিদ্দিক, বসুন্ধরা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম মো. শ্যামল, কালের কণ্ঠের উপ-সম্পাদক হায়দার আলী, নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের ডেপুটি সিএনই আশিকুর রহমান শ্রাবণ, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির সেক্রেটারিয়েট টিমের সদস্য রণিত সেন, মারুফ কাজী ও সোহেল।  অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ খুশী, সাকুর হোসেন সাকু, সাইদুর রহমান চৌধুরী ফারুক, ব্যবসায়ী স্বাধীন শেখ প্রমুখ।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বক্তব্যের শুরুতে তিনি এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পৃষ্ঠপোষকতাকারী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিতে বসুন্ধরা গ্রুপ এগিয়ে এসেছে। শুধু তাই নয়, কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ে বসুন্ধরা গ্রুপকে আমরা পাশে পেয়েছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় কেরানীগঞ্জ সন্ত্রাসের রাজত্ব ছিল। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে কেরানীগঞ্জে কেউ ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারত না। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকত। সেই অবস্থা এখন আর নেই। আমরা কেরানীগঞ্জকে শান্তির জনপদে পরিণত করেছি। এতে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার কথাও না বললেই নয়।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা জোরদারে আরও একধাপ এগিয়ে গেল। এ ধরনের সিসিটিভি দেশের আধুনিক এলাকা ছাড়া আর কোথাও নেই। কেরানীগঞ্জে যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসতে যাচ্ছে, সেগুলো খুবই অত্যাধুনিক। প্রতিটি অলিগলিতে আমরা ক্যামেরা স্থাপন করব। এর মধ্য দিয়ে কেরানীগঞ্জের মানুষকে দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা নিরাপত্তা দিয়ে যাবে। ২০২৪ সালের মধ্যে আমরা কেরানীগঞ্জকে শতভাগ অপরাধমুক্ত ঘোষণা করব ইনশাআল্লাহ।’

উপমহাপুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম তার বক্তব্যে বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের যে সুফল কেরানীগঞ্জের মানুষ পাবে, তার সঙ্গে অন্যকিছুর তুলনা হয় না। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত সড়কে ব্যাপক ডাকাতির ঘটনা ঘটত। আমি দায়বদ্ধতা থেকে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার জুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে দিয়েছিলাম। এরপর থেকে ডাকাতি, অতিরিক্ত গতিতে গাড়িচালনা থেকে শুরু করে অপরাধ কর্মকান্ড অনেকাংশেই লাঘব হয়ে গেছে। কোনো এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে যেকোনো অপরাধী অপরাধ সংঘটনের আগে চিন্তাভাবনা করবে। কেরানীগঞ্জে যে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে, সেটি হবে দেশের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির। এ কাজে এগিয়ে এসে বসুন্ধরা গ্রুপ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা জোরদারে বড় অবদান রাখল।’

কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, অনেকগুলো চোখ, যা দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা কেরানীগঞ্জের মানুষকে নিরাপত্তা দেবে। সেই চোখগুলোর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

SOURCE : দেশ রূপান্তর