ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে পিনপতন নীরবতা। মঞ্চ থেকে ঘোষণা এলো, ‘প্রত্যেকের সামনে থাকা সেলাই মেশিনগুলো তাঁদের জন্য। মেশিন নিয়ে যাওয়ার যাতায়ত ভাড়াটাও তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হবে। খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
সবার মুখে তখন হাসির ঝিলিক। হাত-পা চলতে শুরু করল সেলাই মেশিনে। খটখট শব্দটা এবার নীরবতা ভেঙ্গে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। মনে হচ্ছিলো একটি গার্মেন্টস কারখানায় নারীরা কাজে মগ্ন।
বাড়ি ফিরে কখন থেকে সুই-সুতার ফোঁড়ে জীবনের নতুন নকশা আঁকা শুরু করবেন যেন সেই সময়টার অপেক্ষায় সবাই।
শাহীনূর বেগম নামে এক নারী আপ্লুত হয়ে বললেন, ‘এখন আর মাকে সেবা করার চিন্তা নাই। সেলাই মেশিন দিয়ে আয় করে মাকে ভালোভাবে সেবা করব।’ উপজেলার বাঁশগাড়ি গ্রামের ওই নারী জানালেন, বিয়ের বছর দুয়েক পর স্বামী মারা যায়।
সংসার চালাতে কষ্ট হয় বলে রাজমিস্ত্রী ভাই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এরপর থেকে মাকে নিয়েই তার সংসার। কাঁথা সেলাই আর ছাগল পালনের আয় দিয়ে চলতো দুজনের সংসার। এখন সেলাই মেশিন পাওয়ায় নতুন করে ভালো থাকার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
বসুন্ধরা শুভসংঘেরর উদ্যোগে সোমবার বাঞ্ছারামপুরে ৬০ নারীকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়।
অসহায় পরিবারকে সাবলম্বী করার অংশ হিসেবেই এ উদ্যোগ। ২৩ জেলায় এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। আরো কয়েকটি জেলায় বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ৬৪ জেলাতেই এ কার্যক্রম পরিচালনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ময়নাল হোসেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘শারিরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল তাদের জন্য কিছু করতে নির্দেশ দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান। এরই আলোকে কাজ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যেখানে স্কুল নেই সেখানে স্কুল করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে লাইব্রেরি করা হয়েছে। উপার্জনের জন্য কিছু একটা করার অংশ হিসেবে সেলাই মেশিন দেওয়া হচ্ছে। আমাদের আরেকটা উদ্যোগ হলো ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ, যা পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। একমাত্র বসুন্ধরা গ্রুপই সুদমুক্ত ঋণ দেয়। বসুন্ধরা গ্রুপ শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে। বসুন্ধরা গ্রুপ স্বাস্থ্য নিয়েও কাজ করছে। চক্ষু হাসপাতাল আছে। সেখানে বাছাই করা রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশন করানো হয়।’
অধ্যাপক চাঁন মিয়া সরকারের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান। উপকারভোগীরা যেন সেলাই মেশিনটি যথাযথভাবে কাজে লাগান সেই অনুরোধ করেন তিনি। সেলাই মেশিন পেয়ে উপকারভোগীরা বসুন্ধর গ্রুপের জন্য দোয়া করেন। তাঁরা বলেন, ‘এ মেশিন তাদেরকে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। সংসার চালানো নিয়ে তাদের যে চিন্তা ছিলো সেটা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাবো বলে বেশ ভালো লাগছে।’
ইয়াছমিন আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চা বিক্রেতা বাবার একার পক্ষে সাতজনের সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। বসুন্ধরার এ সেলাই মেশিন নিয়ে আমি আয় করতে পারবো, যা সংসার চালাতে বেশ কাজে লাগবে। বসুন্ধরার জন্য দোয়া রইলো।’
মেয়ের সঙ্গে আসা শারিরিক প্রতিবন্ধী মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘বসুন্ধরা আমার পরিবারের পাশে ছিলো আগে থেকেই। আমার মেয়েদেরকে তারা শিক্ষা বৃত্তি দিয়েছে। এখন এক মেয়েকে সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দিয়ে মেশিন দিলো। তাদের উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবে না।’
SOURCE : কালের কণ্ঠউপকূলের অসহায় নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands by Vulnerable Women on the Coast
বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে উপকূলীয় দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন প্রদান
Bashundhara Group Provides Training and Sewing Machines to Poor Coastal Women
৫৩ লাখ টাকার সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের
Bashundhara Foundation Distributes Tk 5.3 Million in Interest-Free Loans
বসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে জাবির ১১৬ জন শিক্ষার্থী
Bashundhara Group Supports 116 JU Students with Scholarships
কসবায় বসুন্ধরার সহায়তায় চক্ষু চিকিৎসা পেল ৫০০ রোগী
500 Patients Receive Eye Treatment in Kasba with Bashundhara Group’s Support