All news

বসুন্ধরার কুরআনের নূর প্রতিযোগিতায় যে হয়েছেন দেশ সেরা হাফেজ

বসুন্ধরার কুরআনের নূর প্রতিযোগিতায় যে হয়েছেন দেশ সেরা হাফেজ

দীর্ঘ তিন মাস দশ দিনের মহা আয়োজনের পর বেড়িয়ে এলো দেশসেরা হাফেজের নামের ঘোষণা। ১০ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে দেশের সর্ববৃহৎ হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর-পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা’ প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা উত্তরের মারকাজুল ফয়জুল কুরআন মাদরাসার শিক্ষার্থী হাফেজ নুরুদ্দীন মোহাম্মদ জাকারিয়া। পুরস্কার হিসেবে তার হাতে তুলে দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় বিজয়ী ঢাকা উত্তরের মো. শাহরিয়ার নাফিস সালমান পেয়েছে সাত লাখ টাকা। তৃতীয় কুমিল্লার শামসুল উলুম তাহফিজুল হিফজ কুরআন মাদরাসার মো. মোশাররফ হোসাইন পেয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। চতুর্থ ও পঞ্চম হয়েছে ঢাকা দক্ষিণের মারকাজুত তাহফিজ মাদরাসার দুই শিক্ষার্থী মো. নাসরুল্লাহ আনাছ ও মোহাম্মদ বশীর আহমদ।

পুরস্কার হিসেবে তারা পেয়েছে দুই লাখ টাকা করে। সেরা আটের বাকি তিনজন ময়মনসিংহের মো. লাবিব আল হাসান, সিলেটের মো. আবু তালহা আনহার ও ঢাকা দক্ষিণের আবদুল্লাহ আল মারুফ পেয়েছে এক লাখ টাকা করে। এ ছাড়া বিজয়ীদের বিশেষ সম্মাননা ও সনদপত্র দেওয়া হয়। এ ছাড়া তারা বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে পিতা-মাতাসহ পবিত্র ওমরাহ হজ পালনের সুযোগ পাবে। এছাড়াও প্রতিযোগিতার নবম থেকে ৪৫তম স্থান অধিকারীরাও পেয়েছে আর্থিক সম্মাননা।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি-বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের নগদ অর্থ ও সনদপত্র তুলে দেওয়া হয়। এ উপলক্ষ্যে আইসিসিবির নবরাত্রি হলে বিশ্ববরেণ্য সম্মানিত আলেম-উলামাগণের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির এই অনন্য আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে বেসরকারি টেলিভিশন নিউজটোয়েন্টিফোর চ্যানেলে হাফেজদের এ প্রতিযোগিতা সম্প্রচারিত হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমাদ মাদানি (রহ.)-এর সুযোগ্য নাতি আওলাদে রাসুল (সা.) সায়্যিদ মুফতি আফফান মানসুরপুরী (হাফিজাহুল্লাহ)। তিনি ভারত থেকে এসে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সুদূর মিশর থেকে আসেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারি শায়খ ড. আহমাদ আহমাদ নাইনা (হাফিজাহুল্লাহ), চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মুইনুল ইসলাম মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহহিয়া (দা.বা.), জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন।

গত ১ ফেব্রুয়ারি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই রিয়ালিটি শো আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল। দীর্ঘ ১০০ দিনের মহা আয়োজনে অংশ নেয় অন্তত ১০ হাজার হাফেজ; যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। সব মিলিয়ে ১১টি জোনে বিভক্ত করে শুরু হয় অডিশন রাউন্ড। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় জোনে প্রাথমিক অডিশনের মধ্য দিয়ে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আজ সেই মহা আয়োজনের সফল সমাপ্তি হলো।

দেশবরেণ্য ইসলামিক স্কলার ও অভিজ্ঞ হাফেজদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী দায়িত্ব পালন করেন এবং নিখুঁতভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে শ্রেষ্ঠত্ব নির্বাচন করেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলারসহ হাজারও উপস্থিতির সামনে ঘোষণা করা হয় দেশসেরা হাফেজের নাম।

কুরআনের হাফেজদের নিয়ে বৃহৎ এই রিয়ালিটি শো গত রমজানে প্রতিদিন নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হয়।

SOURCE : বাংলাদেশ শিক্ষা