জুয়েলারি শিল্পের বিকাশে এ খাতে উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল চান বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর। গতকাল রাজধানীর ইন্টারন্যশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ‘জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ দাবি জানান। এ শিল্প বিকাশে বিশেষায়িত অঞ্চল করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের নীতি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।
বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক রাজু আহমেদ। সঞ্চালনা করেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল। প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান, পরিচালক সাবরিনা সোবহান, কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, বাজুসের সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
জমে উঠেছে এবারের বাজুস ফেয়ার। মেলায় জুয়েলারি শিল্পের ৫০টি প্রতিষ্ঠান মেলে ধরেছে এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের সোনা ও ডায়মন্ডের নানা অলংকার। যেখানে মিলছে মূল্যছাড়সহ বিভিন্ন অফারে অলংকার কেনার সুযোগ। ক্রেতারা বলছেন, স্বাভাবিক দামে জুয়েলারি কেনা সম্ভব হয় না। তবে মেলায় অফার পাওয়া যাচ্ছে। আর স্টল বেশি হওয়ায় মিলছে পছন্দ অনুযায়ী কেনার সুযোগ। এদিকে বিক্রি ও প্রচারণায় ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে জানালেন উদ্যোক্তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বাজুসের সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, এই শিল্পের জন্য একটা সিকিউরড জোন প্রয়োজন। এক থেকে তিন হাজার বিঘা জায়গা দিলে এটি আরও অনেক বড় শিল্প হিসেবে ভূমিকা রাখবে। আলাদা এক্সপো জোন করা যাবে। সেখানে ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা থাকলে এ শিল্পের ব্যাপক বিকাশ হবে। আইন সংস্কার করলে, ট্যাক্স শিথিল করলে আর চোরাচালান থাকবে না। আমাদের উৎপাদিত জুয়েলারি পণ্যে ভ্যালু এডিশন করতে পারে ৫০ শতাংশ।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, এ শিল্প বিকাশে বিশেষ অর্থনেতিক জোন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের নীতি সহায়তা দেওয়া হবে। ইকোনমিক জোনের আদলে স্বর্ণশিল্পের জন্য বিশেষ অঞ্চল গড়ে তুলতে বাজুস ও বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে কাজ করবে সরকার। বসুন্ধরা বা আশপাশে কোনো জায়গা ঠিক করলে সেখানে স্বর্ণশিল্পের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা যায়। সরকার নীতি সহায়তা দেবে। নিয়ন্ত্রক হিসেবে করণীয়ও করবে। যা অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, স্বর্ণ অত্যন্ত মূল্যবান জিনিস। বিষয়টি মাথায় রেখে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাজুস মিলে এর জন্য একটি নীতি করতে হবে। যদিও একটি নীতিমালা রয়েছে। এর ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, বসুন্ধরার চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানে সফল হয়েছেন। বসুন্ধরার প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভালো। কৃষিভিত্তিক, খাদ্য প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রতিষ্ঠান ভালো করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপ স্বর্ণ রিফাইনারির কাজে হাত দিয়েছে, এখানেও গতি আসছে। এ খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, ৫০ বছর চেষ্টা করছেন কিছু করতে পারেননি। কিন্তু বর্তমান সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এখানেও গতি এসেছে। আজকের মেলার দিকে তাকালেই এটা বোঝা যায়।
সভাপতির বক্তব্যে বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, শিল্পমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, স্বর্ণশিল্পের জন্য একটি নিরাপদ শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাজুস কমিটি মিলে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করবে। তিনি বলেন, স্বর্ণ চোরাকারবারি হয়। আইন সংশোধন না করলে কোনোদিনই চোরাচালান বন্ধ হবে না। বাজুস প্রেসিডেন্ট বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে ৫ থেকে ১০ শতাংশ মূল্য সংযোজন হয়। স্বর্ণশিল্পে ৫০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করা সম্ভব। স্বর্ণে বাংলাদেশে দক্ষ জনবল আছে, দক্ষ শিল্পী আছেন। আমাদের শিল্পীরা অসাধারণ ডিজাইন করেন। দেশের বাজারের পাশাপাশি রপ্তানিও করা যাবে স্বর্ণালংকার।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, দেশে রপ্তানি আয়ের ৮৩ থেকে ৮৪ শতাংশ দখল করে আছে একটি পণ্য। বাকি সব পণ্য মিলে রপ্তানি হয় ১৬ থেকে ১৭ ভাগ। রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে গুটিকয়েক পণ্য দিয়ে তা সম্ভব নয়। গত কয়েক বছর ধরে স্বর্ণভিত্তিক শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর গোল্ড রিফাইনারি প্রতিষ্ঠা ও বাজুসের দায়িত্ব নেওয়ার মধ্য দিয়ে সেই প্রচেষ্টা গতি পেয়েছে। অন্যতম বড় রপ্তানি খাত হিসেবে স্বর্ণশিল্পকে আবির্ভূত করতে যত ধরনের নীতি সহায়তা প্রয়োজন সেগুলো করতে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি।
একই দিন একই অনুষ্ঠানে বিকালে ‘সোনার অলংকার রপ্তানি সম্ভাবনা ও বিশ্ববাজার’ শীর্ষক আরেক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমরা আমাদের প্রত্যেক দূতাবাসকে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়ে জোর দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। যেমন- বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পোর্টফলিও বিস্তৃতকরণ, রপ্তানি বৃদ্ধি ও এর বহুমুখীকরণ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সর্বদা দেশের উন্নয়নে যে কোনো সহায়তা করতে প্রস্তুত। জুয়েলারিশিল্পের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমাদের প্রচেষ্টার কোনো কমতি থাকবে না।
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, আমাদের দেশ একটি মাত্র রপ্তানি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল। জুয়েলারি শিল্প হতে পারে রপ্তানির দ্বিতীয় শীর্ষ পণ্য। অচিরেই আমরা বাংলাদেশ থেকে স্বর্ণ নিয়ে বিশ্বদরবারে হাজির হব। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম প্রমুখ।
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনকসবায় বসুন্ধরার সহায়তায় চক্ষু চিকিৎসা পেল ৫০০ রোগী
500 Patients Receive Eye Treatment in Kasba with Bashundhara Group’s Support
৬০ জন দরিদ্র মহিলাকে সেলাই মেশিন দান করলো বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Donates Sewing Machines to 60 Poor Women in Bancharampur
বসুন্ধরা গ্রুপ বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখছে
Bashundhara Group Keeps Underprivileged Students' Dreams Alive
শায়েস্তাগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributed Food Items Among Underprivileged People in Shayestaganj
আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর- পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা’ আসরের সমাপনী
"Qur'an-er Noor - Powered by Bashundhara" Int'l Hifzul Qur'an Competition Closing Ceremony is Held