All news

ছুটির দিনে গহনাপ্রেমীদের ভিড়

ছুটির দিনে গহনাপ্রেমীদের ভিড়

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার জমে উঠেছে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে শুরু হওয়া বাজুস ফেয়ার ২০২৩। জুয়েলারি শিল্পের সবচেয়ে বড় এই আয়োজনে প্রথম দিন থেকেই আগ্রহ ছিল মানুষের। গতকাল বন্ধের দিন হওয়ায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের চাপ বেড়ে যায়। এ দিন স্টল ও প্যাভিলিয়নে ঘুরে নিজের পছন্দের গহনা দেখেন ও কিনেন গহনাপ্রেমীরা। একই সঙ্গে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিক্রেতারাও বিভিন্ন অফার দিয়েছেন। আজ শেষ হচ্ছে তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন। ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেউ মেলায় এসেছেন বিয়ের গহনা কিনতে, কেউবা এসেছেন বিভিন্ন গহনা সম্পর্কে ধারণা নিতে। আবার অনেকেই বিভিন্ন রকম ছাড় পাওয়া যায় ও তেমনি মজুরিও দিতে হয় না বলে মেলা থেকে গহনা সংগ্রহ করছেন। আপন জুয়েলার্সের সেলস এক্সিকিউটিভ ভাস্কর ঘোষ সুমন সাংবাদিকদের বলেন, 'মেলা উপলক্ষে ডায়মন্ডের সব জুয়েলারিতে আমরা ৩২ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছি। এছাড়া গোল্ডসহ সব ধরনের জুয়েলারিতে মেকিং চার্জেও (মজুরি) ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছি। পাশাপাশি কিছু গিফট রেখেছি, যেগুলোর্ যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।' ছুটির দিনে বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, 'অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ভালো সাড়া পাচ্ছি। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবারে মেলায় দর্শনার্থী বেড়েছে। সব মিলিয়ে প্রত্যাশিত একটা সাড়া পাব বলে আশা করছি।' সোনার বাজারে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত : শিল্পমন্ত্রী এদিকে, সোনার বাজারে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ ভারত বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেছেন, 'ভালো মানের কাজের মাধ্যমে স্বর্ণকে ভারতের সমপর্যায়ে নিতে পারলে আমরা তাদের চেয়েও কম দামে ও কম খরচে মার্কেট ধরতে পারব।' শুক্রবার বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার (আইসিসিবি) হলে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের বাজুস মেলা ২০২৩ ও জুয়েলারি শিল্পে সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, 'ভারতে অনেক বাংলাদেশি সোনার কারিগর কাজ করছে, তাদেরকেও যদি দেশে এনে এই কাজে সংযুক্ত করা যায় তাহলে আরও ভালো যোগ্যতাসম্পন্ন লোক পাব। স্বর্ণের ব্যবসা বাংলাদেশে শুরু থেকেই কটেজ ইন্ডাস্ট্রির মতো চলছে। কিন্তু এই ব্যবসা সেই প্রাচীন সভ্যতা থেকেই চলছে। তাই আজকে আমরা এই শিল্পকে যে উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই, বিশ্ব বাজারে নিয়ে যেতে চাই।' তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে সোনার মেটারিয়াল নেই, যে কারণে মাঝে মাঝে এর সংকট সৃষ্টি হয়। আমাদের এখানে যে মেটারিয়াল প্রয়োজন সেটা যদি আমরা এখানে এনে পরিশোধন করে সেটার একটা ব্র্যান্ড এবং কোয়ালিটি মেইন্টেইন করে বাজারজাত করতে পারি তাহলে এটি সার্থক হবে।' নতুন করে স্বর্ণ উৎপাদনের সিকিউরড জোনের জন্য বসুন্ধরার উদ্যোগে বড় জায়গা ব্যবস্থা করলে সরকারি তদারকিতে তা কাজে লাগানো যাবে বলেও জানান মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বাজুসের সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রম্নপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর স্বর্ণের চোরাচালান বন্ধে সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর কথা বলেন। তিনি বলেন, দুবাই থেকে সোনা আনলে ট্যাক্স ফ্রি, তাহলে আনবে না কেন। ৩৪ লাখ লোক এই ব্যবসার সঙ্গে বিভিন্নভাবে জড়িত আছে। সরকার যদি আমাদের সুযোগ করে দেয় তাহলে এই ব্যবসা অনেক বড় ভূমিকা রাখবে অর্থনীতিতে। সোনার শিল্প গড়ে তুলতে সিকিউরড এলাকা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, এই শিল্পের জন্য একটা নিরাপদ জোন ৩ থেকে ১ হাজার একর, জায়গা দিয়ে থাকলে এটি আরও অনেক বড় শিল্প হিসেবে ভূমিকা রাখবে। আইন শিথিল করলে, ট্যাক্স শিথিল করলে আর চোরাচালান থাকবে না। আর আমাদের উৎপাদিত পণ্যে ভ্যালু ইডিশন করতে পারে ৫০ শতাংশ। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, জুয়েলারি শিল্প বাংলাদেশে অনেক পুরনো একটি শিল্প। হাতে বানানো জুয়েলারি ৮০ শতাংশ বাংলাদেশ ও ভারতেই বানানো হয়। এই শিল্পের অনেক সম্ভাবনা আছে। জানা গেছে, আজ শনিবার শেষ হচ্ছে মেলা। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে মেলা। মেলার প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে জনপ্রতি ১০০ টাকা। তবে পাঁচ বছরের কমবয়সি শিশুদের জন্য লাগবে না কোনো প্রবেশমূল্য।

SOURCE : যায়যায়দিন