All news

চীন চাইলে চায়না টাউন প্রতিষ্ঠায় জমি দেবে বসুন্ধরা

সায়েম সোবহান আনভীরের কাছ থেকে  ফুলের তোড়া গ্রহণ করলেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

ঢাকায় চায়না টাউন প্রতিষ্ঠার জন্য জমির প্রয়োজন হলে বসুন্ধরা গ্রুপ তা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি চিমিং গতকাল বুধবার দেশের সর্ববৃহৎ মিডিয়া হাউস ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পরিদর্শনে আসেন। এ সময় ডেইলি সান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়সভায় চীনের রাষ্ট্রদূতকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ‘চীন আগ্রহী হলে ঢাকায় চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। এ জন্য জমির প্রয়োজন হলে বসুন্ধরা গ্রুপ তা দিতে প্রস্তুত।’ বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘লি চিমিংকে ধন্যবাদ আমাদের ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়ায় আগমনের জন্য। এটা আমাদের জন্য সম্মানজনক। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক রয়েছে। বসুন্ধরা এককভাবে চীনের সঙ্গে প্রায় ২০টি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে। আমরা চীনের সঙ্গে আরো কাজের পরিধি বাড়াতে চাই। আমরা চাই, বাংলাদেশের সাথে চীনের সম্পর্ক আরো গভীর হবে। বসুন্ধরার সঙ্গেও চীনের সম্পর্ক আরো এগিয়ে যাবে। চীন আমাদের দেশে তাদের পণ্য যেমন আনবে, আমরাও আমাদের পণ্য চীনে রপ্তানি করব। আমরা কেবল চীন থেকে পণ্য আমদানিই করতে চাই না, সেখানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিও করতে চাই।’

সায়েম সোবহান বলেন, ‘দেশে সরকারি প্রজেক্টের পাশাপাশি প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করার প্রচুর সুযোগ আছে। চীন সরকারি প্রজেক্টের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও বিনিয়োগ করতে পারে।’ বাংলাদেশে একটি চীনা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় লি চিমিংয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক। এখানে চীনা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হলে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরো সহজ হবে।’

বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাবে সন্তোষ প্রকাশ করে লি চিমিং বলেন, ‘বসুন্ধরার প্রস্তাবগুলো চীন বিবেচনা করবে। বাংলাদেশের এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) এলাকায় ১০০ চীনা কম্পানি বিনিয়োগ করেছে। এসব কম্পানির বিনিয়োগের পরিমাণ ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটা আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক। আমরা দেখছি, অনেক চীনা কম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তারা মিয়ানমার, কম্বোডিয়ার জায়গায় বাংলাদেশকেই বেছে নিচ্ছে।’

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে চীনা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় কোনো বাধা নেই। কিভাবে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা যায় সে বিষয়ে কথা হচ্ছে।’ লি চিমিং আরো বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশ-চীন দুই দেশ সম্পর্ক উপভোগ করছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ও বন্ধুত্ব দিনে দিনে আরো গভীর হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কম্পানির সঙ্গেও বিনিয়োগ বাড়াতে চাই। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ করেছি।’ এতে উভয় পক্ষই লাভবান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ সময় সভায় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি রাস্তাকে ‘চায়না স্ট্রিট’ নামকরণের ঘোষণা দেন। চীনা রাষ্ট্রদূত আনন্দের সঙ্গে এ প্রস্তাবে সম্মতি দেন। মতবিনিময়সভা শেষে চীনা রাষ্ট্রদূত ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া হাউস পরিদর্শন করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা কামাল, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের সম্পাদক জুয়েল মাজহার, চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

SOURCE : কালের কণ্ঠ