All news

স্বর্ণ চোরাচালান ও অর্থপাচার বন্ধে একসঙ্গে কাজ করবে বিএফআইইউ ও বাজুস : সায়েম সোবহান আনভীর

স্বর্ণ চোরাচালান ও অর্থপাচার বন্ধে একসঙ্গে কাজ করবে বিএফআইইউ ও বাজুস : সায়েম সোবহান আনভীর

স্বর্ণ চোরাচালান, অর্থপাচার বন্ধে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) একসঙ্গে কাজ করবে। বাজুসের কোনো সদস্য যদি অর্থ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে বাজুসের ৪০ হাজার সদস্যের ডাটাবেইস বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া হবে। বাজুস চায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে থাকা স্বর্ণ দ্রুত নিলামে দেওয়া হোক।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও বাজুস প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর।   

বিএফআইইউর প্রধান কর্মকর্তা মো. মাসুদ বিশ্বাস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এতে অংশ নেয়। এ ছাড়া সভায় বিএফআইইউর উপপ্রধান ও ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা ও সাবেক সভাপতি এনামুল হক দোলন সাংবাদিকদের বলেন, বাজুসের কোনো সদস্য স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত নয়। তবে কেউ যদি অর্থ চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৈঠকে বিএফআইইউর প্রধান বলেন, “মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়নের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থান রয়েছে। দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। ” 

তিনি বাংলাদেশে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউর ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, জুয়েলারি শিল্পে সোনা চোরাচালান বড় ধরনের সংকট ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরাচালান শুধু দুর্নীতিকে উৎসাহিত করছে না, বরং এর ফলে অর্থনৈতিক সংকট বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ত-ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে সারা দেশের জল, স্থল ও আকাশপথে প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ সোনার অলংকার ও বার চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছে। যা বছর শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা। এ জন্য সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

বৈঠকে সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে বাজুসের পক্ষ থেকে সাত দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। সেগুলো হলো :

১. সোনা চোরাচালান ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাজুসের সমন্বয়ে যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করা।

২. চোরাকারবারিরা যাতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে আরো কঠোর আইন প্রণয়ন করা।

৩. সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যেমন : বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের জোরালো অভিযান নিশ্চিত করা।

৪. চোরাচালান প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সদস্যদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে উদ্ধার হওয়া সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থাসমূহের সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৫. ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলংকার আনার সুবিধা অপব্যবহারের কারণে ডলার সংকট, চোরাচালান ও মানি লন্ডারিংয়ে কী প্রভাব পড়ছে, তা নিরূপণে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা।

৬. অবৈধ উপায়ে কোনো চোরাকারবারি যেন সোনার বার বা অলংকার দেশে আনতে এবং বিদেশে পাচার করতে না পারে, সে জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান।

৭. জল, স্থল ও আকাশপথ ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে কেউ যাতে সোনার বার বা অলংকার আনতে না পারে এ জন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

SOURCE : কালের কণ্ঠ