কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) অংশীদার হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এবিজি লিমিটেড। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। এ চুক্তির মাধ্যমে সিএসইর কমোডিটি এক্সচেঞ্জ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বসুন্ধরা। সিএসইর লেনদেন বৃদ্ধিসহ স্টক এক্সচেঞ্জটির সার্বিক বিকাশ ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
গতকাল রবিবার র্যাডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ হোটেলে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সিএসইর পক্ষে ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক এবং এবিজি লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর চুক্তিতে সই করেন।
এবিজি লিমিটেড সিএসইর কৌশলগত অংশীদার হিসেবে কার্যক্রম পরিচলনা করবে। কোম্পানিটি সিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার মাধ্যমে এ এক্সচেঞ্জের মালিকানায় কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলো।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খাঁন মুকুল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদ সদস্যসহ অন্যরা।
কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে এবিজি লিমিটেড কিনবে সিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার। প্রতিটি শেয়ার ১৫ টাকা দরে ১৫ কোটি ৮৬ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার প্রায় ২৩৮ কোটি টাকায় কিনবে।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সিএসইর পরিশোধিত মূলধন ৬৩৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা এবং শেয়ার সংখ্যা ৬৩ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার। এই স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদের ৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছিল।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসইর পরিচালক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম।
সালমান এফ রহমান বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারে আগ্রহী ছিলেন না। তাই যখন শুনলাম তারা সিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হচ্ছেন, তখন আশ্চর্য হয়েছি। তবে তাদের পুঁজিবাজারে আসা সুখবর। তারা সাহসী উদ্যোগ নিয়েছেন। যারা এমন উদ্যোগ নেন তারা সফল হন।’
তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান যত নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ করেছেন, তাকে অন্য ব্যবসায়ীরা অনুসরণ করেছেন।’ পুঁজিবাজারে বসুন্ধরার এ বড় বিনিয়োগের পর সালমান এফ রহমান উপস্থিত ব্যবসায়ীদের এই বাজারেও বসুন্ধরার চেয়ারম্যানকে অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানান। এর মাধ্যমে বাজারকে ভাইব্রেন্ট করার জন্যও আহ্বান জানান তিনি।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকোসহ অনেক কোম্পানি নামমাত্র শেয়ার ইস্যু করে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ওইসব কোম্পানি অধিকাংশ লভ্যাংশ নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া অনেক তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঠিক আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয় না। এ বিষয়গুলোর দিকে এসইসিকে নজর দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘আজ একটি মাইলফলকের দিন। এ চুক্তির ফলে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হলো। আশা করি, এটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। দেশের পুঁজিবাজার উপকৃত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিএসইকে শক্তিশালী করা এবং কমোডিটি মার্কেটকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে যেসব ঘাটতি রয়েছে সেখানে এবিজির এ সংযুক্তি বড় অবদান রাখবে। আমরা মনে করি, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ করার জন্য সিএসইর বর্তমান পর্ষদ যোগ্য এবং সিএসই যদি কৌশলগত বিনিয়োগকারী পায়, সে ক্ষেত্রে তা আরও ভালো অবদান রাখবে। মূলত এ জন্যই এবিজির শেয়ার কেনায় অনুমোদন দিয়েছি।’
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘এ কমোডিটি এক্সচেঞ্জ মার্কেটে প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা লেনদেন সম্ভব। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে প্রযুক্তি এনে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের উন্নয়ন করা হবে। এ কমোডিটি মার্কেট যখন কার্যকর হবে, তখন দেশের মানুষ এর সুফল পাবে, ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনাবেচা করতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেকেই বিদেশি কোম্পানিকে প্রত্যাশা করি। কিন্তু দেশীয় কোম্পানিগুলোও প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ আমাদের মধ্যে দেশের প্রতি যে টান রয়েছে সেটার কারণে আমরা বেশি অবদান রাখার চেষ্টা করি।’
সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ‘সিএসই কয়েক বছর ধরে কৌশলগত বিনিয়োগকারী খুঁজছে। এর মধ্যে সিএসই রোড শো করেছে, বেশ কয়েকটি বিদেশি এক্সচেঞ্জ ও কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এ সময়ে দেশি-বিদেশি কোনো গ্রুপ এগিয়ে আসেনি। কিন্তু এবিজি এগিয়ে এসেছে। এ মার্কেটকে এগিয়ে নিতে এবিজি নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।’ অর্থনীতির বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সিএসইর শেয়ার কেনায় তিনি বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান।
টঙ্গীতে আগুনে নিহত ৩ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর পরিবারের পাশে সায়েম সোবহান আনভীর, চেয়ারম্যান এবিজি
Chairman of ABG Sayem Sobhan Anvir Stands with Families of Firefighters who Lost their Lives in The Tongi Fire
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ, সচ্ছলতার স্বপ্ন ২ শতাধিক নারীর
Bashundhara Foundation’s Interest-Free Loans Bring the Dream of Prosperity to Over 200 Women
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে চরফ্যাশনে সেলাই মেশিন বিতরণ
Bashundhara Shuvashangha Distributes Sewing Machines in Charfassion
সড়কের চিত্র বদলে দিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বসুন্ধরার বিশেষ বিটুমিন
সীমান্তবর্তী নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands Beside Border-Area Women
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় স্বপ্নপূরণের আশা