All news

দেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর সনদ পেল সিএসই

দেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর সনদ পেল সিএসই

দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জের সনদ পেল চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), যা চলতি বছরেই চালু করতে চায় সংস্থাটি। এর মাধ্যমে বাজারে আন্ডার ইনভয়েসিং ওভার ইনভয়েসিং কমবে, মধ্যস্থতাকারীদের দৌরাত্ম্য কমবে এবং পণ্যের সঠিক মূল্য দেখতে পারবেন ক্রেতারা।

আজ বুধবার (২০ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সিএসইর চেয়ারম্যানকে এই সনদ তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান শেখ কবির আহমেদ এবং বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘কমোডিটি এক্সচেঞ্জ নিয়ে আমার অনেক দিনের ব্যক্তিগত স্বপ্ন ছিল। সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম ভাই যখন দায়িত্ব নেন, তখন তাকে আমি একটি কথাই বলেছিলাম, শুধু ইকুইটি দিয়ে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ ফিজিবল করা সম্ভব নয়। অন্ততপক্ষে সেবা হিসেবে হলেও আপনি সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনে কমোডিটির জন্য যান। আশা করি, যিনি সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের নেতৃত্বে আছেন, তিনি উদার দৃষ্টিতে দেখলে একটি নতুন দিক উন্মোচিত হবে।

 

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ

তিনি আরো বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আজ আমরা প্রাইস ডিসকভারি নিয়ে চিন্তা করছি, প্রাইস যৌক্তিক মূল্য খুঁজছি। এই জায়গাটায় একটা বিশাল ভূমিকা রাখতে পারবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ। বিশেষ করে আলু, চিনি ও তেল—এই তিনটি পণ্য দিয়ে এ বছরেই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ শুরু করা যেতে পারে। প্রথমে নন-ডেলিভারি, পরবর্তী সময়ে ডেলিভারি দিয়ে শুরু করতে পারি।’

গোল্ড এক্সচেঞ্জ নিয়ে ২০১৩ সালে আমরা প্যান এশিয়ার সঙ্গে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে একটি এমওইউ সই করেছিলাম জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটার মাধ্যমে আমরা গোল্ড এক্সচেঞ্জ করতে পারি। এটার সম্ভাবনা অনেক। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কম্পানি ও মার্চেন্ট ব্যাংকের পোর্টফোলিওর বৈচিত্র্যকরণের জন্যও এটা ব্যালান্স হিসেবে কাজ করবে। কারণ এখানে ফিউচার থাকবে, ফরোয়ার্ড মার্কেট থাকবে, এখানে হেজিং করার সুযোগ থাকবে।’ সুতরাং বেশ কয়েকটি পথ উন্মোচিত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘বিএসইসির অধীনে স্টেকহোল্ডাররা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে দেশ ও পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে।’

অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘কমোডিটি এক্সচেঞ্জ একটি মিসিং কম্পোনেন্ট ছিল, যেটা বিশ্বের অন্যান্য দেশে আছে। যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করেন, যারা এক্সপোর্ট করেন, ইমপোর্টকে গুরুত্ব দেন, তাদের জন্য এটা জরুরি। এর মাধ্যমে এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের রাইট প্রাইস, মধ্যস্থতাকারীদের দূরত্ব কমা, আন্ডার ইনভয়েস, ওভার ইনভয়েসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে এক্সপোর্ট-ইমপোর্টে ডিসিপ্লিন তৈরি হবে। সামনের দিনগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক সহজ হয়ে আসবে। ক্রেতারা পণ্যের বিশ্ববাজারে কেমন দাম আছে, তা জানতে পারবেন।’

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম বলেন, ‘সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন কমোডিটি এক্সচেঞ্জ লাইসেন্সটা দেওয়ার পরপরই আমরা মাল্টিকমোডিটি এক্সচেঞ্জ ইন্ডিয়ায় যারা এক্সপার্ট আছেন, তাঁদের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে অ্যাপয়েন্ট করি, যেহেতু তাঁদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা আমাদের যে রুলস দিয়েছেন, সেটাও আমরা জমা দিয়েছি। বর্তমানে আমরা এই অবস্থায় এসেছি। আমাদের সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার কেনার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের যাত্রা শুরু হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শেখ কবির বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাচ্চাদের খুব ভালোবাসতেন। এ জন্য তার জন্মদিনকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো কি না, সেটা আমার সন্দেহ।’ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পাঁচজনকে বিভিন্ন কম্পানিতে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

SOURCE : কালের কণ্ঠ