All news

‘বসুন্ধরার সাহায্য পামুই’

মানিকগঞ্জে বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা

‘আর কোথাও না পাই, জানি বসুন্ধরার সাহায্য আমরা পামুই। বন্যা কন, শীত কন, করোনা কন সব সময়ই হেরা আমাগো সাহায্য পাঠায় দিছে।’ প্রচণ্ড আস্থার সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন মানিকগঞ্জ সুইপার কলোনির হেড দাদুয়া জমাদার। ‘বসুন্ধরা সাহায্য না করলে অর্ধেক পেট খেয়ে দিন কাটাইতে অইতো। গত বছর করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত চার দফায় বসুন্ধরার চাল, ডাল, তেল, আটা আমাগো বাঁচায় দিছে।’ বসুন্ধরার খাদ্য সহায়তা নিতে আসা স্বামী পরিত্যক্তা ফুলজান বেগম এভাবেই জানালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া। বসুন্ধরা থেকে পাওয়া ২০ কেজির বস্তা মাথায় তুলে বাসের হেলপার মাহাবুব বলছিলেন, ‘শুধু এবার নয়, গত বছরও যখন বেকার ছিলাম, তখনো বসুন্ধরার সাহায্য পাইছি।’ শুধু দাদুয়া, ফুলজান কিংবা মাহাবুবই নন, বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি মানিকগঞ্জের দুস্থদের মনে তৈরি করেছে অন্য রকম আত্মবিশ্বাস। প্রায় প্রতিদিনই মানিকগঞ্জের নানা প্রান্তে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে খাদ্য সহায়তা। জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসও মানিকগঞ্জে বসুন্ধরা গ্রুপের এই মানবিক সহায়তাকে সরকারের সহায়ক কর্মসূচি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক কর্মসূচির আওতায় মানিকগঞ্জ ডিস-এবল পিপল্স অর্গানাইজেশন টু ডেভেলপমেন্টের (এমডিপিওডি) সদস্য ২০০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে ২০ কেজি করে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন তিনি। এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ এমনকি করোনা সংকটেও বসুন্ধরা গ্রুপ কর্মহীন ও দুস্থদের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছে, তা অনুকরণীয়।’ এমডিপিওডির নির্বাহী পরিচালক এন্তাজ উদ্দিন বলেন, ‘বিভিন্ন দুর্যোগ মুহূর্তে প্রতিবন্ধীরা অসহায় হয়ে পড়ে। তবে প্রতি দুর্যোগেই বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।’ মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানুর হিসাবে সরকারের বাইরে মানিকগঞ্জে ত্রাণ সহায়তায় বসুন্ধরা গ্রুপ রয়েছে শীর্ষে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দুর্যোগে সারা জেলায় তাদের পরিকল্পিত ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম একটি দৃষ্টান্ত।’ মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন বলেন, যেকোনো দুর্যোগে মানিকগঞ্জের দুস্থদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাদের মতো অন্য বিত্তবানরাও যদি এগিয়ে আসত, তাহলে ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচি আরো বেগবান হতো। বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহবুব মোর্শেদ হাসান রুনু বলেন, ‘নদীভাঙন, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা মানিকগঞ্জ। সেভাবে কলকারাখানা না থাকায় বেকারত্বের কারণে অন্যান্য জেলার চেয়ে দারিদ্র্যের হারও তুলনামূলক বেশি। মূলত এ কারণেই বসুন্ধরা গ্রুপ মানিকগঞ্জে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি চালু করেছে। দুস্থদের নিয়মিত আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগে খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে দেশের শীর্ষস্থানীয় এই প্রতিষ্ঠান।’ তিনি আরো বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের লক্ষ্য দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করা। এটি গ্রুপ চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিকল্পনা ও চিন্তার ফসল।’ তিনি বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েও মানুষ কাজ হারিয়ে ধুঁকছে। এর মধ্যে সামনে ঈদ। এ দুটি দিক বিবেচনায় নিয়ে ঈদের আগেই মানিকগঞ্জে ১০ হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তার কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। প্রতিটি পরিবার পাচ্ছে চাল, ডাল, তেলসহ ২০ কেজি খাদ্যসামগ্রী। প্রয়োজন হলে খাদ্যসামগ্রীর বরাদ্দ আরো বাড়ানো হবে। বসুন্ধরা গ্রুপের মানবিক সহায়তা কর্মসূচি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’

SOURCE : কালের কণ্ঠ