All news

অসহায় মানুষের পাশে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন

অসহায় মানুষের পাশে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন

এখন দ্বিতীয় ধাপ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ চলছে। প্রতিটি ধাপ ৫০ সপ্তাহ করে ভাগ করা হয়েছে। এক ধাপে ৫০টি কিস্তি, তা শেষ হলে পর্যায়ক্রমে সে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে যেতে পারবে। এই ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ ও আদায় কাজে সাতজন কর্মী আছেন।

তাঁরা চারটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন। তাঁদের বেতন, যাতায়াত খরচসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ। অসহায় কর্মহীন ও অতিদরিদ্র মানুষকে স্বাবলম্বী করতে ২০০৫ সালে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান গ্রহণ করেছেন একটি অসাধারণ উদ্যোগ। অল্প কিছু টাকা ঋণ পেলে দাঁড়িয়ে যেতে পারবে—এমন মানুষকে খুঁজে বের করছেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে।

দীর্ঘমেয়াদি কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ প্রদান শুরু করেছেন। ক্ষুদ্রঋণ, তবে সার্ভিস চার্জ বা সুদ নেই। অসচ্ছলদের সাবলম্বী করতে এমন ঋণ দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের অতিদরিদ্র পরিবারকে। ফলে এরই মধ্যে ভাগ্য বদলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বহু অতিদরিদ্র পরিবারের। হাসি ফুটেছে পরিবারগুলোর সদস্যদের মুখে।

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২০ হাজার ৩৫১টি অতিদরিদ্র পরিবার আর্থিকভাবে সাবলম্বী হয়েছে। এই শ্রেণির মানুষকে অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। বর্তমানে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৮০টি গ্রাম, নবীনগর উপজেলার একটি গ্রাম এবং হোমনা উপজেলার একটি গ্রামে ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

পর্যায়ক্রমে বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর ও হোমনা উপজেলার প্রতিটি গ্রামের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত লোকদের কাছে ঋণসুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। উপকারভোগীদের কাছ থেকে কোনো প্রকার আমানত বা সঞ্চয় গ্রহণ করা হয় না। এমনকি ঋণ বিতরণের তারিখ থেকে তিন মাস পর্যন্ত ঋণের কিস্তিও আদায় করা হয় না। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প দেশ ও জনগণের উন্নয়নমুখী প্রকল্প। এই প্রকল্প বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচনে বড় অবদান রাখবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

মহামারি করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে করোনার কারণে ৫৬তম সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ কার্যক্রম ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। গত ২০ অক্টোবর থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪ কর্মদিবসে ৭২৮ জনের মধ্যে মোট ৭০ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। গ্রহীতারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, মাস্ক পরে সারিবদ্ধভাবে ঋণ গ্রহণ কার্যক্রমে অংশ নেন। তাঁরা জানান, অতিদরিদ্র হওয়ায় ব্যাংক তাঁদের ঋণ দেয় না। অন্য কোথাও থেকে ঋণ নিলে সুদ ও অন্যান্য খরচ দিতে হয়। কিন্তু বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণ নিলে কিছুই দিতে হয় না। ফলে আমাদের এলাকার সবাই এখন এই ঋণ নিয়ে কৃষি কাজসহ গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালছেন এবং সাবলম্বী হয়ে উঠছেন। ঋণগ্রহীতারা জানান, এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিলে পরের সপ্তাহ থেকে সুদসহ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের টাকায় তিন মাস ব্যবসা করে ব্যবসার মুনাফা থেকেই কিস্তি দেওয়া যায়।

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এখন পর্যন্ত ঘুর্ণায়মানভাবে ১৭ কোটি টাকার মতো ঋণ দেওয়া হয়েছে। এই ঋণ আদায়ের পরিমাণ শতভাগ। সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত এই ঋণ গ্রহণ করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ৩২ ধরনের কাজে বিনিয়োগ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন এলাকার দরিদ্র মানুষ। বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরী জানান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের লক্ষ্যই হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের এই ঋণ দিয়ে স্বচ্ছল করে তোলা। অর্থনীতির মূল ধারায় যাঁরা বরাবরই অবহেলিত ও পিছিয়ে থাকেন, সেই সব তৃণমূল মানুষকে সামনে নিয়ে আসতে বসুন্ধরা গ্রুপের সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যার মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির চিত্র।

SOURCE : কালের কণ্ঠ