All news

বাজুসের মেলায় সোনা-হীরায় মূল্যছাড়

বাজুসের মেলায় সোনা-হীরায় মূল্যছাড়

সোনা-হীরার হাজারো ডিজাইনের অলংকার নিয়ে শুরু হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় মেলা। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুসের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী অলংকার প্রদর্শনী ও মেলায় অলংকার কিনলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন বিশেষ অফার ও মূল্যছাড়। বাজুস ফেয়ার নামে এই মেলা গতকাল থেকে শুরু হয়েছে রাজধানীর পূর্বাচলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রী হলে।

তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে ৯টি প্যাভিলিয়ন, ১৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ১৫টি স্টলে ৪১টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এ বছর মেলার প্রতিপাদ্য করা হয়েছে ‘সোনায় বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের সঞ্চয়’। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।

গতকাল সকালে ‘বাজুস ফেয়ার-২০২৪’-এর উদ্বোধন করেন চিত্রশিল্পী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রফেসর ইমেরিটাস রফিকুন নবী এবং ফ্যাশন ডিজাইনার ও ইউনেসকো আর্টিস্ট ফর পিস বিবি রাসেল।

বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ মির্জা আজম, বাজুসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর মমতাজ বেগম, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স (উই) সভাপতি নাসিমা আক্তার ও বাজুস সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় প্রমুখ।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, দেশীয় জুয়েলারি শিল্পকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি বিশ্ববাজারে একটি নতুন অবস্থান তৈরি এবং দেশের স্বর্ণশিল্পীদের তৈরি আধুনিক নকশার অলংকারের পরিচিতি বাড়তে এ মেলা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

এবারের মেলায় পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি অলংকারের মজুরিতে অনেক প্রতিষ্ঠান ছাড় দিচ্ছে। এক ছাদের নিচে সারি সারি সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের স্টলে সোনার তৈরি আংটি থেকে শুরু করে কানের দুল, চুড়ি, বালা, ব্রেসলেট, গলার চেইন, লকেট, চিকহার, সীতাহার, টিকলি প্রভৃতি সব পণ্যই পাওয়া যাচ্ছে। একই সঙ্গে আছে সোনার তৈরি চশমা, ঘড়ি, সিংহ, মুকুটের মতো বিভিন্ন শোপিসও। সোনার পাশাপাশি ডায়মন্ড বা হীরার গয়নাও রয়েছে বেশ কিছু স্টলে।

মেলায় মূল্যছাড়ের পাশাপাশি গ্রাহকদের প্যাকেজ আকারেও বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। যেমন : গৌরব জুয়েলার্সের স্টলে সোনার তৈরি মুকুট, সিংহসহ বিভিন্ন অলংকার রয়েছে। স্টলটি থেকে ১০ লাখ টাকার ওপরে যেকোনো পরিমাণে সোনার অলংকার কিনলে গ্রাহকদের থাইল্যান্ডে ৪ দিন ৩ রাতের কাপল ট্যুরের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে ।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গনেশ দেবনাথ বলেন, ‘আমরা সোনার তৈরি বিভিন্ন দামি শোপিস ও গয়না বিক্রি করছি। তবে গ্রাহকের অনেকেই তা পছন্দ করলেও দামের কথা শুনে আবার পিছিয়ে যান।’

অলংকার ছাড়াও জুয়েলারি খাতের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে মেলায় এসেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর একটি রাজ ঐশ্বরী। প্রতিষ্ঠানটি স্বর্ণ পরীক্ষা, হলমার্ক করা, স্বর্ণ কাটা, চেইন তৈরির বিভিন্ন যন্ত্র প্রদর্শন করছে। এসব যন্ত্রের দাম ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে।

গতকাল সকালে বাজুস ফেয়ার উদ্বোধন শেষে ‘আমাদের অলংকার, আমাদের ঐতিহ্য’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বক্তারা বলেন, গয়নার বাজারে এখনো গ্রাহকের প্রথম পছন্দ সোনা। এই ধাতুর মূল্য সংযোজন অন্য যেকোনো সম্পদের তুলনায় ৬-৭ গুণ বেশি। বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবেও সোনার ব্যবহার রয়েছে। এ কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বাড়ছে।

সেমিনারে ডিজাইনার ও ইউনেসকো আর্টিস্ট ফর পিস বিবি রাসেল বলেন, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে কারিগরদের আলাদা ও নিজস্ব নকশা রয়েছে। এগুলোকে সহজীকরণ করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় বলেন, ‘তৈরি পোশাকসহ অনেক খাত রপ্তানিতে ভালো করছে। অথচ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা সোনা রপ্তানির সুযোগ তৈরি করতে পারছি না।’ সোনা রপ্তানির সুযোগ তৈরিতে সরকারের কাছে সহযোগিতা চান বাদল চন্দ্র রায়।

SOURCE : দেশ রূপান্তর