যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি দেশে বিনিয়োগ করার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও বাংলাদেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার ইউরোপ সংস্করণের যাত্রা শুরুর অনুষ্ঠানে তাঁরা এই আহ্বান জানান।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের ইমপ্রেশন ইভেন্টস ভেন্যুতে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান পরিণত হয়েছিল ব্রিটেনের রাজনীতিক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের বর্ণাঢ্য মিলনমেলায়। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
প্রধান অতিথি ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বরেণ্য সাংবাদিক-লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার জুলকারনাইন। ব্রিটেনের জনপ্রিয় উপস্থাপক উর্মি মাজহারের উপস্থাপনায় প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর কাছে আজ উন্নয়নের রোল মডেল।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্মানজনক আসনে প্রতিষ্ঠিত। এই সম্মান ধরে রাখতে মিডিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা আমরা ইতিবাচকভাবেই দেখি। কিন্তু অবাধ মিডিয়া-স্বাধীনতার সুযোগে কেউ কেউ মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করেন, এটি মোটেই কাম্য নয়।
’ প্রবাসী বাংলাদেশিদের রাজনীতিতে স্বাগত জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এই পথটি কিন্তু মসৃণ নয়। জেল-জুলুম সহ্য করার ক্ষমতা নিয়েই রাজনীতিতে নামতে হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউরোপ সংস্করণের শুভযাত্রায় অভিনন্দন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রচার শীর্ষে অবস্থানকারী এই পত্রিকাটি লন্ডনসহ ইউরোপেও একই অবস্থানে উঠে আসবে, এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়া পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করায় লন্ডনের সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন যদি বসুন্ধরা গ্রুপের পণ্যসামগ্রীর বিজ্ঞাপন পায়, তাহলে ব্রিটেনের অন্যান্য বাংলা মিডিয়াও তা পাবে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রচারসংখ্যার শীর্ষে থাকার কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে থাকে বলেই পত্রিকাটি আজ দেশের সর্বাধিক প্রচারিত জাতীয় দৈনিক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার প্রকৃত চেহারা তুলে ধরার চেষ্টা করে বলেই বাংলাদেশ প্রতিদিনের ওপর পাঠকের এই ভরসা। তিনি বলেন, ‘শুধু নেতিবাচক নয়, দেশের প্রতিটি সেক্টরের ইতিবাচক খবরও যাতে দেশবাসী জানতে পারে, বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রতিটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিই আমাদের এমন পরামর্শ ছিল। সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলতে পারার সাহস থাকার জন্যই আমাদের এই মিডিয়া গ্রুপটি মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।’
বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মতো বিনিয়োগবান্ধব দেশ পৃথিবীর আর কোথাও নেই। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে একমাত্র সামরিক সরকার ছাড়া প্রতিটি সরকারই ছিল ব্যবসাবান্ধব। ১/১১ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অন্তত ২০ বছর পিছিয়ে দিয়ে গেছে এই সরকার। ব্যবসায়ীদের এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ওই সময় ১/১১ সরকার নিয়ে নেয়; যার মধ্যে তাঁর নিজের রয়েছে ২৫৬ কোটি টাকা, এমন তথ্যও দেন তিনি।
আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন থেকে ইউরোপে বসবাসরত অনাবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা, সম্ভাবনা, অর্জন—সব বিষয়ই পৌঁছে দেবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে। অনাবাসী ও আবাসিক বাংলাদেশিদের সেতুবন্ধ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন থেকে কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘আমি দেখেছি ব্রিটেনে বাঙালি সাংবাদিকতা কিভাবে দাঁড়িয়েছে। ৫০ বছরে ব্রিটেনে বাঙালি সাংবাদিকদের মধ্যে আমি এক জীবন্ত ইতিহাসে পরিণত হয়েছি। আগে বাংলা টাইপরাইটার ছিল না, হাতে শিরোনাম লিখতে হতো। এই সময় জনমত পত্রিকাটি যুদ্ধ করে টিকে থেকেছে। এখনো বাঙালি কমিউনিটির কথা তুলে ধরছে তারা। আজকে এই যাত্রায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ প্রতিদিন। আমার এই সাংবাদিকতা জীবনে তারা প্রথম আমাকে সম্মাননা দিয়েছিল।
বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক, বেসরকারি টেলিভিশন নিউজ টোয়েন্টিফোর এবং রেডিও ক্যাপিটালের সিইও নঈম নিজাম বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন কাগজের যাত্রা শুরুর সময় লক্ষ্য ছিল অবহেলিত দরিদ্র মানুষের কথা তুলে ধরা। তাই মানুষের ভালোবাসার টানে বাংলাদেশ প্রতিদিন এখন সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। ব্রিটেনে বাংলা মিডিয়ার যাত্রা শুরু ১০০ বছর আগে। এখানকার বাংলা ভাষাভাষি মানুষ এবং সাংবাদিক বন্ধুরা তিলে তিলে এ জায়গায় নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের মূলধারার মিডিয়াকে প্রবাসী মানুষের কাছে তুলে ধরতে আমাদের ইউরোপ যাত্রার সূচনা। ব্রিটেনের বুকে বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রাম, ত্যাগ, ভালোবাসাকে বাংলাদেশ প্রতিদিনের পাতায় আমরা তুলে ধরব। এর পাশাপাশি কমিউনিটি মানুষের কাছে তুলে ধরব দেশের খবর।
বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ব্রিটেনের বাংলা মিডিয়া পরিবার সদস্য হিসেবে গ্রহণ করায় আগত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ব্রিটেনসহ ইউরোপে বসবাসরত অনাবাসী বাঙালিদের সুখ-দুঃখ, সংগ্রামে এখন থেকে বাংলাদেশ প্রতিদিন সহযোদ্ধা হিসেবে পাশে থাকবে। অনাবাসীদের অর্জনের কথা পত্রিকাটি যেমন পৌঁছে দেবে শিকড় ভূমিতে, ঠিক তেমনি দেশেও তাদের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বাংলাদেশ প্রতিদিন।
টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ মেয়র জন বিগস বলেন, এই সন্ধ্যায় আনন্দঘন মুহূর্তে যাত্রা শুরু করছে লন্ডনে বাংলাদেশ প্রতিদিন। মিডিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমার অনেক গণমাধ্যমের বন্ধু উদ্বিগ্ন। কিন্তু আমি বলব, উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হয় এবং এতেই আমাদের কমিউনিটি শক্তিশালী হয়। আমি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে গেলে একটি ইংরেজি দৈনিকের খোঁজ করি আমার দেশের খবর জানতে। তেমনি ইউরোপীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষের খবর জানাতে আশা করি বাংলাদেশ প্রতিদিন ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ প্রতিদিন তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব বিকাশ, সমাজ বিনির্মাণ, অর্থনীতি এবং আমাদের দেশের উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার জুলকারনাইন বলেন, সমাজের অগ্রযাত্রায় মিডিয়ার অগ্রগামী ভূমিকা থাকে। জনমত বিনির্মাণ, বিকাশ এবং গণতন্ত্র রক্ষায় সংবাদপত্রের ভূমিকা ব্যাপক। বাংলাদেশ প্রতিদিন ২০১০ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে মানুষের আস্থা অর্জন করে এখন দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। ইউরোপেও আশা করব তাদের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা বলেন, ‘আমরা আশা করব বাংলাদেশ প্রতিদিন ইউরোপের বাঙালি পাঠকের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে। মূলধারার মিডিয়া সব জায়গায় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বাংলাদেশ প্রতিদিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার সম্পাদক তাইছির মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউরোপ সংস্করণকে স্বাগত জানাই। ১৯১৬ সালে ব্রিটেনে বাংলা পত্রিকার যাত্রা শুরু হয়েছে। এই ১০০ বছর সময়ের মধ্যে দেড় শতাধিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকায় এখন পর্যন্ত সর্বশেষ সংযোজন বাংলাদেশ প্রতিদিন। বর্তমানে ছয়টি পত্রিকা পাওয়া যাচ্ছে।
সাপ্তাহিক বাংলা পোস্ট পত্রিকার পরিচালক এবং চ্যানেল এসের সিইও তাজ চৌধুরী বলেন, ‘ইউরোপের বাজারে বাংলা মিডিয়ার টিকে থাকা তেমন কঠিন কিছু না। ব্রিটেনের প্রিন্ট মিডিয়ায় নতুন শেয়ারহোল্ডারের আগমন ঘটল। বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত জাতীয় দৈনিকের এ আগমনকে অভিনন্দন জানাই। আমরা চাই খুব দ্রুত সপ্তাহে এক দিন নয়, প্রতিদিন এই পত্রিকা হাতে পেতে।
সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সম্পাদক ফরিদ আহমদ রেজা বলেন, বাংলা কাগজের লড়াইয়ে ইউরোপে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে স্বাগতম। আমাদের লড়াই এখানে বসবাসকারী বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই, যোগ্যতার ভিত্তিতে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। আশা করব এই লড়াইয়ে আপনারাও আমাদের সহযোদ্ধা হিসেবে পাশে থাকবেন।
সাপ্তাহিক পত্রিকার চিফ এডিটর বেলাল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের এই অগ্রযাত্রাকে শুভকামনা জানাচ্ছি। মিডিয়া এখন অস্থির একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউরোপ সংস্করণ নিঃসন্দেহে সাহসী পদক্ষেপ।
সাপ্তাহিক জনমত পত্রিকার সম্পাদক এবং লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি নবাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ইউরোপে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। বিলেতে আমরা যারা বাংলা পত্রিকা প্রকাশ করি সেটা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয়, ভাষার প্রতি মমতা ও ভালোবাসায়। বাংলা ভাষার বিস্তার ও প্রসারে আশাকরি বাংলাদেশ প্রতিদিন আমাদের সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করবে।
SOURCE : কালের কণ্ঠভাগ্য ফেরানোর হাতিয়ার পেলেন নারীরা
Women Get Tools for Changing Their Fate
নাটোরে ২০ জন অসচ্ছল নারীকে সেলাই মেশিন দিল বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Shuvosangho Provide 20 Women Sewing Machines in Natore
After Training in Natore, 20 Underprivileged Women Got Bashundhara's Sewing Machine
নাটোরে প্রশিক্ষণ শেষে বসুন্ধরার সেলাই মেশিন পেল ২০ অস্বচ্ছল নারী
৪ লক্ষাধিক রোজাদারকে বসুন্ধরার ইফতার
Bashundhara Provides Iftar to Over 4 Lakh People this Ramadan
সুশৃঙ্খলভাবে বায়তুল মোকাররমে চলছে বসুন্ধরার ইফতার
Bashundhara's Iftar is Going on at Baitul Mukarram