All news

‘এহন নিজের পায়ে দাঁড়াবের পারবো’

শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ২০ অসহায় নারীকে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ

‘বসুন্ধরা শুভসংঘের মাধ্যমে সেলাই কাজ শিখছি। আমাকে একটা সেলাই মেশিনও দিবে বসুন্ধরা গ্রুপ। এহন নিজের পায়ে দাঁড়াবের পারবো।’ সেলাই প্রশিক্ষণ নিতে এসে কথাগুলো বলছিলেন মাছুরা খাতুন (৩০)।

পাবনার সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের মথুরাপুরে বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ২০ অসহায় নারীকে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক নারীকে একটি করে সেলাই মেশিন উপহার দেবে বসুন্ধরা গ্রুপ। দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষিত নারীদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেবেন উপমহাদেশের নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।
নারীরা এখন আর ঘরে বসে নেই।

সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা দূর করে প্রান্তিক নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণার নাম বসুন্ধরা গ্রুপ। গ্রামীণ অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করতে তাঁদের দক্ষ করে গড়ে তুলছে নানা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। এর মধ্যে অন্যতম সেলাই প্রশিক্ষণ।
এ ছাড়া দেওয়া হচ্ছে ব্লক, বুটিকসহ নানা হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ। সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের প্রত্যেককে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। এতে দূর হচ্ছে বেকারত্ব। সচ্ছলতা আসছে প্রতিটি পরিবারে। এভাবেই দেশের প্রতিটি অঞ্চলের গ্রামীণ বেকার নারীদের মাঝে আশার আলো ছড়াচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ।
তাঁদের ভালোভাবে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। মাছুরা খাতুনের মতো নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্নে বিভোর এখন সবাই। পাবনার সুজানগর উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের মথুরাপুরে নতুন করে জীবন সাজানোর লক্ষ্যে সেলাই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ২০ নারী। প্রতিদিনই কাজ শিখতে আসছেন তাঁরা। নিত্যদিনের সেলাই প্রশিক্ষণে তাঁরা নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলছেন। সেলাইয়ের ফোঁড়ে ফোঁড়ে বুনছেন নতুন নতুন স্বপ্ন। বসুন্ধরা গ্রুপের এমন মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুজানগর উপজেলার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সুজানগর নিজাম উদ্দিন আজগর আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে এগিয়ে এসেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো খবর। দেশের ও মানুষের কল্যাণে কাজ করছে বসুন্ধরা গ্রুপ। তাদের এমন মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, অনেক ধন্যবাদ জানাই।’
পাবনা সদর উপজেলার চরতাপুর ইউনিয়নের টাটিপাড়ায় বিয়ে হয়েছিল মাছুরা খাতুনের। স্বামী সোনার দোকানে কাজ করতেন। বিয়ের এক বছরের মাথায় স্বামী তাঁকে পরিত্যাগ করে অন্যত্র বিয়ে করেন। এখন বাবার বাড়িতে থাকেন মাছুরা। এখানে নিত্য অভাবের ছোবল। আর কথা শোনানোর লোক তো আছেই। নিজের পরিবারের মানুষই কথা শোনায়। এসব থেকে বাঁচতে নিজে কিছু একটা করার কথা ভাবেন মাছুরা। তাঁকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়মিত সেলাইয়ের কাজ শিখছেন মাছুরা। সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে তাঁকে একটি সেলাই মেশিনও দেওয়া হবে। সেই মেশিনে আয় করে ঘুরে দাঁড়ানোর দৃঢ় প্রত্যয় মাছুরার। শুধু মাছুরাই নন, এখানে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রত্যেক নারীই জানিয়েছেন তাঁদের স্বপ্নের কথা। নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর কথা। তাঁদের এই অধরা স্বপ্নগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছে বসুন্ধরা শুভসংঘ।

SOURCE : কালের কণ্ঠ