খুবই ভালো লাগে। আমাদের স্কুলে নতুন জামা, জুতা, ব্যাগ পেয়েছি। সঙ্গে বই, খাতা, কলম, পেনসিলও পেয়েছি। স্যার-আপা আমাদের ভালোভাবে পড়ালেখা করান।
আমরা অনেক খুশি
চারদিক ঘিরে ব্রহ্মপুত্র নদ, মাঝখানে ছোট্ট দ্বীপচর জলাঙ্কারকুঠি। দেশের সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত জেলা কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় অবস্থিত এই চর। একটি স্কুলের অভাবে এত দিন এই চরের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারেনি। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল দরিদ্র পরিবারের শিশুরা।
এই শিশুদের কথা চিন্তা করে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে বছরের শুরুতে সেখানে চালু করা হয় ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল’। বর্তমানে ৪০ জন শিশু পড়ালেখা করছে এই স্কুলে। আগে সন্তানদের পড়ালেখা করাতে না পারার হতাশা থাকলেও এখন স্কুল পেয়ে নতুন স্বপ্ন করে দেখছেন চরের অভিভাবকরা। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে তাঁদের সন্তানরা লেখাপড়া করছে। সন্তানদের নিয়ে আশার আলো দেখছেন অভিভাবকরা।
চরের বাসিন্দা হায়দার আলী পেশায় মুদি দোকানি। চরে লেখাপড়ার ব্যবস্থা না থাকায় তাঁর দুই সন্তানকে তাদের নানাবাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তাঁর আশা ছিল পড়ালেখা করে উচ্চশিক্ষিত হবে সন্তানরা, কিন্তু তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। অল্প বয়সেই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। হায়দার আলী বলেন, ‘সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। এই চরে কোনো স্কুল না থাকায় দূরের স্কুলে যেতে হতো। সেটি মোটেও নিরাপদ ছিল না। পরে ছেলে ও মেয়েকে তাদের নানাবাড়িতে রেখে পড়াতে হয়েছে। এখন এই চরে স্কুল হয়েছে। আমরা চরবাসী অনেক খুশি। আমাদের সন্তানরা এখান থেকে পড়ালেখা শিখে উচ্চশিক্ষিত হবে। বসুন্ধরা গ্রুপ এত ভালো একটি কাজ করেছে, বলে বোঝাতে পারব না।’
বিউটি আক্তার, শিক্ষার্থী, বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল, উলিপুর, কুড়িগ্রাম
স্থানীয় কয়েকজন প্রবীণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুড়িগ্রামের বৃহত্তম উপজেলা উলিপুর। এর পূর্ব দিকে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা, পশ্চিমে তিস্তা নদী। উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে চর জলাঙ্কারকুঠি। দুই যুগ আগে জেগে ওঠা চরে ধীরে ধীরে বসতি শুরু হলেও এখানে ছিল না শিক্ষাব্যবস্থা। বর্তমানে চরে প্রায় ৪০০ পরিবারের বাস। তাদের একমাত্র পেশা কৃষি। দুই যুগ অতিবাহিত হলেও এখানে পৌঁছায়নি শিক্ষার আলো। শিক্ষার অভাবে অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছিল কোমলমতি শিশুদের জীবন। জলাঙ্কারকুঠি চরের উত্তরে বুড়াবুড়ি ও দক্ষিণে হাতিয়া ইউনিয়ন। দুই ইউনিয়নের মানুষের বাস হওয়ায় অনেকটা অবহেলিতও তারা। আশপাশে সরকারি কিংবা বেসরকারি স্কুল না থাকায় দূরের স্কুলে ঝুঁকি নিয়ে সন্তানদের পাঠাতে চাইতেন না অভিভাবকরা, যার ফলে এই চরে বেড়ে ওঠা শিশুদের বেশির ভাগই থেকে যেত নিরক্ষর। তাঁরা বলেন, এই বছরের শুরু থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ আমাদের চরে একটি স্কুল চালু করছে। এটা আসলে স্কুল নয়, আমাদের স্বপ্ন দেখার শুরুটা করে দিয়েছে। অনেক দোয়া করি বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য। এমন অবহেলিত চরে তারা যে মহান কাজটা করেছে, আল্লাহ তাদের ভালো করবেন।
শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষার্থী মঞ্জু মিয়া (৮) বলে, ‘আমাদের চরে স্কুল না থাকায় পড়ালেখা করতে পারিনি। এখন স্কুল হওয়ায় পড়ালেখা করতে পারছি। নিয়মিত স্কুলেও আসি। আশপাশের চরের শিক্ষার্থীরাও এই স্কুলে আসে। খুব ভালো লাগে।’
সাদিয়া নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্কুল থেকে আমাদের বই, খাতা, কলমের পাশাপাশি নতুন জামা, জুতা, ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। আমরা পড়ালেখা করে অনেক শিক্ষিত হতে চাই। ভালো মানুষ হতে চাই।’ মরিয়ম খাতুন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘স্কুলের স্যার-আপারা আমাদের অনেক সুন্দর করে পড়ালেখা বুঝিয়ে দেন। আমরা সহজে বুঝতে পারি। শুভসংঘ স্কুলে পড়ালেখা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
পার্শ্ববর্তী বাবুর চরের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, ‘জলাঙ্কারকুঠিতে বসুন্ধরা গ্রুপ একটি স্কুল করে দিয়েছে। আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। ওই স্কুলে আমার ভাতিজাও পড়ে। আগে স্কুল না থাকায় পড়ালেখা করাতে পারিনি। এই স্কুল পাস করলে ভাতিজাকে শহরের স্কুলে পড়াব।’ বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের শিক্ষক আবু সাঈদ ও সাহানাজ বেগম জানান, এখানকার অভিভাবকরা বাচ্চাদের পড়াতে অনেক আগ্রহী। তাঁরা নিয়মিত বাচ্চাদের স্কুলে পাঠান। প্রতিদিনই শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। শিশুরা আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘জলাঙ্কারকুঠি একটি দুর্গম চর। ওই চরের আশপাশে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় দেশের বৃহত্তম শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ একটি স্কুল করে দিয়েছে। বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল তৈরি করে সেখানকার কোমলমতি শিশুদের পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই স্কুলের মাধ্যমে ওই চরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। সব সময় ভালো কাজের মধ্য দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণ করছে। আমি বসুন্ধরা গ্রুপের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করছি।’
SOURCE : কালের কণ্ঠবসুন্ধরা গ্রুপের শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে জাবির ১১৬ জন শিক্ষার্থী
Bashundhara Group Supports 116 JU Students with Scholarships
কসবায় বসুন্ধরার সহায়তায় চক্ষু চিকিৎসা পেল ৫০০ রোগী
500 Patients Receive Eye Treatment in Kasba with Bashundhara Group’s Support
৬০ জন দরিদ্র মহিলাকে সেলাই মেশিন দান করলো বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Donates Sewing Machines to 60 Poor Women in Bancharampur
বসুন্ধরা গ্রুপ বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখছে
Bashundhara Group Keeps Underprivileged Students' Dreams Alive
শায়েস্তাগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributed Food Items Among Underprivileged People in Shayestaganj