All news

সীমান্তবর্তী নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ

সীমান্তবর্তী নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ

তিন মাসের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ শেষে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে জীবননগরের দরিদ্র নারীরা।

দেশের সীমান্তবর্তী নীরব উপজেলা জীবননগরে দারিদ্র্যপীড়িত নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে এক মানবিক উদ্যোগ নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির সহায়তায় বসুন্ধরা শুভসংঘ বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে ২০ জন অসচ্ছল নারীর হাতে সেলাই মেশিন উপহার দিয়েছে। এই উদ্যোগকে ‘মানবিক বিপ্লবের সূচনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা।

বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশনায় ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের নেতৃত্বে বসুন্ধরা শুভসংঘ সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন দুঃসাহসিক উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে। গত তিন বছরে দেশের বিভিন্ন জেলার অসহায় নারীদের মধ্যে তিন হাজারের বেশি সেলাই মেশিন উপহার দিয়েছে শুভসংঘ।

চুয়াডাঙ্গার এই সীমান্তঘেঁষা উপজেলায় উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। এখানকার নারীরা প্রায়ই পরিবারের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পিছিয়ে থাকেন। এমন নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে বসুন্ধরা শুভসংঘ জীবননগরে তিন মাসব্যাপী বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ দেয়। প্রশিক্ষণ শেষে জীবননগর থানা মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামের সামনে এই সেলাই মেশিনগুলো হস্তান্তর করা হয়।

অনুষ্ঠানের উপস্থাপক সেলাই মেশিন বিতরণের সময় বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় শুভসংঘের এই পদক্ষেপ শুধু কয়েকজন নারীকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নয়, এটি এক মানবিক বিপ্লবের সূচনা। সীমান্তের নীরব জনপদের এই নারীরা এখন আশার প্রতীক।’

বসুন্ধরা গ্রুপের এই উপহার পেয়ে নারীদের জীবনে যেন নতুন ভোর এসেছে। উপকারভোগী লিপা খাতুন, যিনি স্বামী সিএনজি চালক হওয়া সত্ত্বেও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ যেদিন থেকে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে, সেদিন থেকেই স্বপ্ন বুনছি... স্বামীকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে পারব। আমার স্বপ্নপূরণের সারথি হওয়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।’

আরেক উপকারভোগী নেকজান খাতুন বলেন, ‘অভাবের সংসারে কোনো টাকা ছাড়াই সেলাই মেশিন আর তিন মাসের প্রশিক্ষণ পেয়েছি। এখন আমার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আশা করি, একদিন সচ্ছলতার মুখ দেখব।’ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অনার্স পড়ুয়া শারমিন আক্তার রূপা বলেন, ‘এই উপহার আমাদের জীবনে আমূল পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে। নতুন আলোর দিশা দেখাবে।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান জানান, গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের নারীদের স্বাবলম্বী করতে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার অসহায় নারীদের খুঁজে বের করে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ শুধু সেলাই মেশিন দিয়েই কাজ শেষ করে না। এরপর খোঁজখবরও রাখে... আশা করি, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান স্যারের এই মহতী উদ্যোগের ফলে নারীদের টেকসই উন্নয়ন ঘটবে।’

জীবননগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৈয়দজাদী মাহবুবা মঞ্জুর মৌনা শুভসংঘের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এই শক্তিকে প্রশিক্ষণ ও সুযোগের মাধ্যমে জাগিয়ে তুললে গ্রামীণ অর্থনীতি পাল্টে যাবে। এই নারীরা এখন নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবেন এবং নিজেদের মর্যাদা অর্জন করতে পারবেন।’ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জীবননগর থানার ওসি মো. মামুন হোসেন বিশ্বাসসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বসুন্ধরা শুভসংঘ জীবননগর শাখার সদস্যরা।

SOURCE : Daily Sun বাংলা