All news

‘মার চোখ বালা অইছে, অহন আমি ডাক্তার দেহাইছি’

‘মার চোখ বালা অইছে, অহন আমি ডাক্তার দেহাইছি’

ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) হাতে নিয়ে বেশ হাসিমুখে ফিরছিলেন মাঝ বয়সী আনোয়ারা বেগম। কথা হলে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আগেরবার মার চোখ টেহা ছাড়া অপারেশন করছিল। অহন আমি ডাক্তার দেহাইছি। আমারে ওষুধ দিয়া দিছে। দরকার অইলে কইছে আমার চোকও অপারেশন করাইবো।’
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিনা মূল্যে চোখের সেবা পেয়ে কথাগুলো বলছিলেন আনোয়ারা বেগম। বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মান্দারপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত শাহআলম সরকার রিপনের স্মরণে মান্দারপুর সরকারবাড়ি তরুণ প্রজন্ম সংঘের উদ্যোগে বসুন্ধরা আই হসপিটালের সেবা পেয়েছে অন্তত ৫ শতাধিক মানুষ। বাড়ির কাছে ঢাকার নামিদামি চিকিৎসক ও আধুনিক সেবা বিনা মূল্যে পেয়ে উপকারভোগীরা বেশ খুশি হন।
বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মো. সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের দল দিনভর চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এ সময় বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি ছানি অপারেশনের জন্য রোগী বাছাই করা হয়। বাছাইকারীদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়াসহ চিকিৎসা ব্যয় বহন করে বসুন্ধরা গ্রুপ। মা আমেনা গফুর চ্যারিটেবল‌ হাসপাতালে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মান্দারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোতাহার হোসেন সরকার।
ঢাকাস্থ কসবা উপজেলা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আয়োজনের উদ্যোক্তা এম এ কাইয়ুম সরকারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এতে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন ইস্পাত প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান।
চিকিৎসা নেওয়া সরুফা বেগম বলেন, ‘পুলা একটা অসুস্থ। আরেকটার মানসিক সমস্যা। চোহে আমি কম দেহি।
বাড়ির কাছে ডাক্তার আইছে শুইন্না আইছি। ডাক্তার কইছে অপারেশন লাগবো। হেরা লয়া জাইবো। থাহন-খাওন হেরার। অপারেশনের টেহাও লাগত না।’
মো. সোহাগ নামের এক যুবক জানান, তার মাকে দেখিয়েছেন। চিকিৎসক বলেছেন অপারেশন করতে হবে। সময়মতো ওনারাই ফোন করে অপারেশনের তারিখ জানাবেন। এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।

ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে অনেককে ব্যবস্থাপত্রের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। বাছাই করা রোগীদেরকে ঢাকায় নিয়ে বিনা মূল্যে অপারেশন করবে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট।’

উদ্যোক্তা এম এ কাইয়ুম বলেন, ‘বসুন্ধরার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো আমাদের এলাকায় চিকিৎসা দিয়েছে তারা। গ্রামের মানুষও অপেক্ষায় থাকে কখন বসুন্ধরার লোকজন আসবে।’

SOURCE : কালের কণ্ঠ