All news

বানভাসি মানুষের পাশে বসুন্ধরা

বানভাসি মানুষের পাশে বসুন্ধরা

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। প্রশাসন ছাড়াও ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বন্যার্তদের উদ্ধার কার্যক্রম, আশ্রয়কেন্দ্র খোলা ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ চলছে।

বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরাও।
এই গ্রুপের সৌজন্যে বিতরণ করা হচ্ছে শুকনা খাবার, পানি, বিস্কুট, চিড়া, শিশুখাদ্য, ওষুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রভৃতি। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বন্যার্তদের মধ্যে এই সহায়তা সামগ্রী বিতরণ করা হয়। নোয়াখালী ও কুমিল্লায় বসুন্ধরার সৌজন্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ নিয়ে কালের কণ্ঠ’র প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
নোয়াখালী : বেগমগঞ্জ উপজেলায় গতকাল রবিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ত্রাণ বিতরণ করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এর আগের দিন বিকেলে পৌঁছে প্রবল বর্ষণের মধ্যেও গভীর রাত পর্যন্ত দুর্গতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডিঙি নৌকা দিয়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। 
বেগমগঞ্জের জীরতলী ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়ি, ছয়ানী ইউনিয়নের তৈয়বপুর, ভবানী জীবনপুর, ফরাজি বাড়ি, দোয়ানী বাড়ি এলাকাসহ বহু এলাকায় গিয়ে বন্যার্তদের ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের সার্বিক সহযোগিতায় এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণে অংশ নেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাসরত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের সঙ্গে এই কার্যক্রমে অংশ নেন স্থানীয় ছাত্র-তরুণ এবং বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া সমন্বয়ক মাসুদ রানা।

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) : চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পৌরসভাসহ ১৩ ইউনিয়নে প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঠিক এমন সময়ে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। গতকাল বিকেলে বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সাত শতাধিক পরিবারকে খাদ্য ও ওষুধ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
বসুন্ধরার খাদ্য সহায়তা পেয়ে নয়ন মিয়া বলেন, ‘বন্যার পানি আমার সব শেষ করে দিয়েছে। জীবনে কখনো এত পানি দেখিনি।
আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। আজ পাঁচ দিন কেউ খবর নিতে আসেনি। বসুন্ধরা গ্রুপই প্রথম আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাই আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’
উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের জয়নব বিবি বলেন, ‘৬০ বছরের জীবনে এত পানি দেখিনি। কোথা থেকে এলো এত পানি, আমাদের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। এমন দুর্যোগের সময় আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বসুন্ধরার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

ত্রাণ বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের এবিজি টেকনোলজিস লিমিটেডের নির্বাহী (প্রশাসন) সিনিয়র অফিসার মামুন হোসেন ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র বিজ্ঞাপন নির্বাহী তুরজয়। তাঁরা বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি উপজেলার ভেতরের গ্রামে গিয়েও ত্রাণসামগ্রী তুলে দিতে। দেশের যেকোনো দুর্যোগের সময়ে মানুষের পাশে থাকে বসুন্ধরা গ্রুপ। আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশ নেওয়া নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়াতুল্লাহ বলেন, ‘আমরা চাই সব সাধারণ শিক্ষার্থী ভাই ও বোন দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবকের কাজে এগিয়ে আসুক। আমাদের ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ।’

ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে আসা আরেক শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার স্বর্ণা বলেন ‘আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় শুকনা খাবার, পানি, বিস্কুট, চিড়া, শিশুখাদ্য, ওষুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে এসেছি। আমরা চেষ্টা করব এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে।’

SOURCE : কালের কণ্ঠ