দারিদ্র্য জয় করা অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর। ভাগ্যাহত ১০৪ জন শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সায়েম সোবহান আনভীরের জন্মদিন উপলক্ষে কালের কণ্ঠ শুভসংঘের আয়োজনে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এসব শিক্ষার্থীর মাঝে এককালীন নগদ অর্থ তুলে দেওয়া হয়।
বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষাটাই একমাত্র নিজের, যা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। শিক্ষা থেকেই মানুষের প্রজ্ঞা তৈরি হয়। প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এমনভাবে তোমাদের বড় হতে হবে, যাতে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত হতে পারো। তবেই তোমাদের পাশে থাকা সার্থকতা পাবে।
সায়েম সোবহান আনভীরের জন্মদিন উপলক্ষে কালের কণ্ঠ শুভসংঘের আয়োজনে শিক্ষার্থীর মাঝে এককালীন নগদ অর্থ তুলে দেওয়া হয় |
অনুষ্ঠানে কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আমরা দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীদের একত্র করার চেষ্টা করেছি। যাদের কেউ এতিম, কেউ শারীরিক প্রতিবন্ধী, হতদরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠেছে। পরে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর সাহেবকে জানালাম, এসব ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্ব শুভসংঘ থেকে আমরা নিতে চাই। আমরা তাদের ভর্তি করাবো, তাদের বই-খাতার ব্যবস্থা করবো, তাদের ঢাকায় আসা-যাওয়ার ব্যবস্থাসহ জামা-কাপড়ের ব্যবস্থা করে দেব, প্রতি মাসে এসব শিক্ষার্থীদের দুই হাজার টাকা বৃত্তি দিতে চাই। তিনি (সায়েম সোবহান আনভীর) তখন জানতে চান কতজনের ব্যবস্থা করতে চাই। আমি ১০০ জনের কথা জানালে তিনি ব্যবস্থা নিতে বলেন। আজকে ১০৪ জন শিক্ষার্থীকে নগদ ২৫ হাজার টাকা শিক্ষা-সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতি বছর এই আয়োজন করবো। এরপর এইচএসসির শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াবো।
কালের কণ্ঠের উপ-সম্পাদক ও শুভসংঘের উপদেষ্টা হায়দার আলী বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের মধ্যে সকল প্রকার মানবিক গুণাবলি দেখা যায়। করোনা দুর্যোগ থেকে শুরু করে যেকোনো ক্রান্তিকালে তিনি অসহায়, দুস্থ, নিঃস্ব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। জন্মদিনের আনন্দ দরিদ্র্য অসহায় মানুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়াটাও বিরল দৃষ্টান্ত। একই দিনে সারা দেশে লক্ষাধিক এতিম শিশুকে সুস্বাদু খাবার বিতরণ এবং শতাধিক অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীকে নগদ সহায়তা দেওয়ার মধ্য দিয়ে তিনি মানবিকতার আরেক উদাহরণ সৃষ্টি করলেন।
দারিদ্র্যজয়ী ১০৪ জন শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর |
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, টেলিভিশন চ্যানেল নিউজটোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক জুয়েল মাজহার, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব, শুভসংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদেকুল ইসলাম এবং পরিচালক জাকারিয়া জামান।
নিজের জন্মদিনে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে নগদ ২৫ হাজার টাকা তুলে দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার প্রতিটি ধাপে পাশে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের দুই বোন জিম আফরোজ ও মিম আফরোজ। পিতা শফিকুল ইসলাম ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক। অভাবের সংসারে দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে পারছিলেন না। কিন্তু দুই অদম্য মেধাবী ঘোষনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করায় হাসি ফোটে পরিবারে। শফিকুলের মনে জেগে ওঠে দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার আশা। তাতে বাধ সাধে দারিদ্র্য। দুই বোনের উচ্চশিক্ষার পথ মসৃণ করতে পরিবারটির পাশে দাঁড়ালেন সায়েম সোবহান আনভীর।
কিশোরেগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আলীনগর গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম। একাধিক বিয়ে করে সংসার ছেড়ে চলে যান রিয়াজুলের বাবা নাছির মিয়া। সংসার আর লেখাপড়ার খরচ জোগাতে ছোটবেলা থেকেই কৃষিশ্রমিকের কাজ শুরু করে রিয়াজুল। এত কষ্টের মাঝেও দমে যায়নি সে। শত বাধা পেরিয়ে হক সাহেব উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করে রিয়াজুল। হাওরের এই অদম্য সংগ্রামীর উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করতে পাশে দাঁড়িয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি।
সংসারের বড় মেয়ে জন্মের পরই দেখেছেন বাবার চলতে না পারার কষ্ট (প্রতিবন্ধী)। নিজে হাটতে শিখলেও দেখেছেন বাবার অসহায়ভাবে থেমে থাকা। দেখেন অভাবের সংসার চলে প্রতিবন্ধী বাবার অটোরিকশার আয়ে। এত কিছুর মধ্যেই টানাপোড়েনের সংসারে সম্প্রতি নরসিংদীর খিরাটি এ কে হাইস্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন মোসা. নিলয়। পরিবারের চার বোনের মধ্যে নিলয় বড় হওয়ায় পরিবার নিয়ে তার ভাবনাটাও বেশি। নিলয়ের শিক্ষাজীবন সহজ করতে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন সায়েম সোবহান আনভীর।
বাবা মো. ফরহাদ মিয়ার স্বপ্ন তার চার মেয়েই উচ্চ শিক্ষিত হয়ে করবেন সম্মানজনক কোনো চাকরি। সেই চিন্তা থেকে কষ্ট করে সংসার চালালেও মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিয়েছেন তিনি। অটোরিকশা চালিয়ে আয় দিয়ে যেখানে সংসার চালানোই কঠিন, এমন পরিস্থিতিতে চার মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয় ফরহাদ মিয়াকে।
তিনি বলেন, ‘আমার বড় মাইয়াটা অন্য বোনদের কথা চিন্তা করতে গিয়ে পড়াশোনায় আগাইতে পারে নাই। তার ছোটজন গত বছর পাস (এসএসসি) করলেও নিলয় এ বছর পাস করছে। আমার এক মাইয়ার (নিলয়) পড়াশোনা নিয়া আমার আর চিন্তা নাই। বসুন্ধরার মতো এত বড় গ্রুপ আমার মাইয়ার পাশে দাঁড়াইছে। এর চেয়ে আর বড় পাওয়া কী হইতে পারে! এমডি (বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর) সাহেবকে আল্লাহ আরও ভালো কাজ করার তওফিক দিন। আমি আমার বাকি মাইয়াগুলারেও লেখাপড়া করাইতে চাই। তারা যেন ভালা মানুষ হইতে পারে। ’
মোসা. নিলয় বলেন, ‘বাবার চলতে না পারা আমাদের কখনো থামাতে পারেনি। বাবার প্রতিবন্ধকতা আমার শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। আমি সফলতার সাথে শিক্ষাজীবন শেষ করতে চাই। বৃত্তি দেওয়ার পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্রুপ আমার পাশে দাঁড়ানোয় আমি কৃতজ্ঞ। ’
Hospital for Covid-19 Patients at Bashundhara’s ICCB to Open Soon
মীরসরাই এবং কেরানীগঞ্জে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করলো বসুন্ধরা গ্রুপ
বসুন্ধরা গ্রুপ কাপ গলফ টুর্নামেন্ট ২০১৩ গলফারদের উৎসব
Dazzling Finish of Bashundhara Cup Golf Tournament 2013
Bashundhara Group Exporting Tissue to 16 Countries
Bashundhara Group Chairman Stands by Ailing Girl
Bashundhara Group Chairman Ahmed Akbar Sobhan Stands by Sick Tasmia
India Willing Partner in Bangladesh Development
Bashundhara Group Chairman Stands by Ailing Boy Siraj
Ceremony of Bashundhara Cup Golf