All news

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আলোর পথ দেখাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আলোর পথ দেখাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ

রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা টিনশেড বস্তি। দিনের বেলায়ই অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ। এই অন্ধকার বস্তি আরো অন্ধকারে ডুবে আছে। কারণ এখানে শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি তেমনভাবে।
মূল রাস্তা থেকে পূর্ব দিকের গলি দিয়ে নেমে বেশ কিছুটা এগোলেই শোনা যায় শিশুদের পড়ার আওয়াজ। যে ঘরটি থেকে শিশুদের কোলাহল শোনা যাচ্ছিল, সেখানে হাজির হলে মনে হবে পুরো বস্তিতে আলো জ্বেলে দেওয়ার দীক্ষা দেওয়া হচ্ছে এখান থেকে। ঘরটির সামনে সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল’। এই স্কুল থেকেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

বস্তিবাসী মা-বাবারা তাঁদের ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে পারেননি। একেবারেই নিম্ন আয়ের মানুষ হওয়ায় চাইলেই স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাতে পারতেন না। অনেক অভিভাবক বেসরকারি স্কুলে ছেলেমেয়েকে ভর্তি করালেও আর্থিক সমস্যার কারণে লেখাপড়ার খরচ চালাতে না পেরে আবার বন্ধ করে দিয়েছেন; যে কারণে অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছিল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা। লেখাপড়া করতে না পারায় অপরিণত বয়সে অনেকে বিভিন্ন দোকানে, গার্মেন্টসে কাজে যুক্ত হয়ে যায়।
এতে বস্তিতে শিক্ষার প্রসার আর হয়ে ওঠেনি। অন্ধকারেই ডুবে ছিল পুরো বস্তি। অভিভাবকদের অসচেতনতা ও  শিক্ষার অভাবে এখানকার ছেলেমেয়েরা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ত। পুরো বিষয়টি আমলে নিয়ে বস্তির অসচ্ছল পরিবারের ছেলেমেয়েদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশনায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মিরপুর টিনশেড বস্তিতে দেশের প্রথম বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন কালের কণ্ঠ’র প্রধান সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন।

স্কুলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বস্তিতে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। অসচ্ছল পরিবারের মা-বাবারা তাঁদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার পথ খুঁজে পান। স্কুলটি উদ্বোধনের দিনই শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই, স্কুলড্রেস, ব্যাগ ও অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ তুলে দেন ইমদাদুল হক মিলন। তিনি বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মূলধারায় যুক্ত করতে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে পড়তে শিক্ষার্থীদের কোনো খরচ দিতে হবে না। শিক্ষকদের বেতন, শিক্ষার্থীদের সব শিক্ষা উপকরণ আমরা বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে বহন করব। এই স্কুলের কোনো শিক্ষার্থী পরবর্তী সময়ে ভালো ফল করে যত দূর পড়তে চায়, তাদের পাশে থাকবে বসুন্ধরা গ্রুপ। এখন পর্যন্ত ১৫টি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ৬৪ জেলায় বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

SOURCE : কালের কণ্ঠ