জুয়েলারি ব্যবসার ক্ষেত্রে স্বর্ণ, স্বর্ণালংকার, রূপা বা রূপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে তিন শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে আয়োজিত প্রাক-বাজেট (২০২৩-২৪) সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাজুস সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসান, সহ-সম্পাদক সমিত ঘোষ অপু, স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের সদস্য সচিব পবন কুমার আগরওয়াল উপস্থিত ছিলেন।
বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীর বাজেট উপলক্ষে বাজুস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাজুসের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে দেশের স্বর্ণশিল্প বিকাশে গোল্ড রিফাইনারি উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি এই শিল্পে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ব্যবসাবান্ধব করার প্রস্তাব করেন তারা।
এ ছাড়া আকরিক স্বর্ণ আমদানিতে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক (সিডি) পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে শর্তসাপেক্ষে এক শতাংশ ও আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ১০ শতাংশের পরিবর্তে শুল্ক হার পাঁচ শতাংশ করলে স্থানীয়ভাবে স্বর্ণবার ও হাতে তৈরি অলংকার প্রস্তুতে নতুন বিনিয়োগকারীরা উৎসাহীত হবেন বলে আশা ব্যবসায়ীদের।
লিখিত বক্তব্যে বাজুসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের ২০২২ সালের প্রতিবেদন মোতাবেক, বিশ্ববাজারে সোনার চাহিদা ছিল চার হাজার ৭৪০ টন। এর মধ্যে সোনার অলংকারের চাহিদা দুই হাজার ১৮৯ দশমিক ৮ টন। বাংলাদেশের সোনার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪০ টন। তবে প্রকৃত চাহিদা নিরুপণে সরকারের সমীক্ষা প্রয়োজন। বৈধভাবে সোনার চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা কাঁচামালের উচ্চমূল্য, অতিরিক্ত উৎপাদন ব্যয়, শিল্প সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম সোনা পরিশোধনাগার স্থাপন করতে যাচ্ছে।
বিশ্ব বাজারে আর কিছু দিন পর রপ্তানি হবে 'মেড ইন বাংলাদেশ' সম্বলিত সোনার বার, যা আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে বড় ভূমিকা পালন করবে সোনা শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে। কিন্তু এই পরিশোধনাগারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির শুল্ক কর ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ। যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে প্রাথমিক উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি পাঁচ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাট হার ও অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট ছোট জুয়েলারি ব্যবসায়ী।
এই নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নীতি নির্ধারকদের ওপর অনেকখানি দায় বর্তায়। অবাস্তব নীতি প্রণয়ন, শুল্ক নির্ধারণে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গোঁড়ামি, ভ্যাট ও আয়কর কর্মকর্তাদের হয়রানি এবং আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস সদস্যদের ক্ষমতার অপব্যবহার এই শিল্পের সাথে সংযুক্ত ব্যবসারীদের ভোগান্তি ও আতঙ্কের প্রধান কারণ। এতে সরকার প্রত্যাশিত রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।
বাজুস মনে করে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে জুয়েলারি খাতে আরোপিত আয়কর ও ভ্যাট হার কমানো এবং আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। এতে যেমন সরকারের বৈদেশিক আয় আসবে, তেমনি বাড়বে রাজস্ব আয়। বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের আরেকটি খাত তৈরি হবে।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ১২টি প্রস্তাব উপস্থাপন করছে বাজুস। প্রস্তাবগুলো হলো:
বর্তমানে জুয়েলারি ব্যবসার ক্ষেত্রে সোনা, সোনার অলংকার, রূপা বা রূপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে তিন শতাংশ করা; ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) যতো দ্রুত সম্ভব নিবন্ধনকৃত সকল জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ; বর্তমানে অপরিশোধিত আকরিক স্বর্ণের ক্ষেত্রে আরোপিত সিডি পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমদানি শুল্ক শর্তসাপেক্ষে এক শতাংশ নির্ধারণ; আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণের ক্ষেত্রে সিডি ১০ শতাংশ এর পরিবর্তে আইআরসিধারী এবং ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য শুল্ক হার পাঁচ শতাংশ করা; হীরা শিল্প বিকাশে কাটিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রয়োজনীয় আমদানিকৃত রাফ ডায়মন্ডে সহনশীল শুল্ক হার নির্ধারণ; বৈধপথে মসৃন হীরা আমদানিতে উৎসাহ জোগাতে ডায়মন্ড অলংকারে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করার জন্য ব্যবসাবান্ধব শুল্কহার নির্ধারণ; আয়কর আইনে ৪৬-(বিধি) (২) ধারার অধীনে গোল্ড রিফাইনারি বা সোনা পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ বা ট্যাক্স হলিডে প্রদান; সোনার অলংকার প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে আমদানিকৃত কাঁচামাল ও মেশিনারিজের ক্ষেত্রে সকল প্রকার শুল্ককর অব্যাহতি প্রদানসহ ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ বা ট্যাক্স হলিডে প্রদান; বৈধভাবে স্বর্ণবার, স্বর্ণালংকার, স্বর্ণের কয়েন রপ্তানি উৎসাহিত করতে কমপক্ষে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করা শর্তে রপ্তানিকারকদের মোট মূল্য সংযোজনের ৫০ শতাংশ হারে আর্থিক প্রণোদনা প্রদান।
SOURCE : কালের কণ্ঠটঙ্গীতে আগুনে নিহত ৩ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর পরিবারের পাশে সায়েম সোবহান আনভীর, চেয়ারম্যান এবিজি
Chairman of ABG Sayem Sobhan Anvir Stands with Families of Firefighters who Lost their Lives in The Tongi Fire
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ বিতরণ, সচ্ছলতার স্বপ্ন ২ শতাধিক নারীর
Bashundhara Foundation’s Interest-Free Loans Bring the Dream of Prosperity to Over 200 Women
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে চরফ্যাশনে সেলাই মেশিন বিতরণ
Bashundhara Shuvashangha Distributes Sewing Machines in Charfassion
সড়কের চিত্র বদলে দিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বসুন্ধরার বিশেষ বিটুমিন
সীমান্তবর্তী নারীদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Group Stands Beside Border-Area Women
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় স্বপ্নপূরণের আশা