All news

বসুন্ধরা হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সদের ঝুঁকি থাকবে না

আইসিসিবিতে কোভিড-১৯ হাসপাতাল এই মাসেই খুলছে

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস চিকিৎসায় দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) হাসপাতাল আমাদের জন্য বিশাল সাপোর্ট। এখানে দুই হাজার ১৩টি বেড নিয়ে অনেক ধরনের সুবিধা থাকছে। আশা করছি এটি আমাদের একটি বড় সেন্টার হবে এবং এখানে রোগীদের বড় ধরনের সাপোর্ট দিতে পারব। অবস্থান, ভৌগোলিক ও পাারিপার্শ্বিকভাবে মিলিয়ে এটি অবশ্যই আমাদের জন্য বড় সুবিধা।’

গতকাল মঙ্গলবার সকালে আইসিসিবি হাসপাতাল চত্বর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

আসাদুল ইসলাম আরো বলেন, ‘দেশের দুর্যোগ পরিস্থিতিতে বিশাল সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এগিয়ে এসে এই সাপোর্ট দেওয়ার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপকে ধন্যবাদ। দ্রুততার সঙ্গে এর কাজ শেষ করতে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ।

এখানে অন্যান্য সুবিধা ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি এই মাসের শেষেই এখানে চিকিৎসাসেবা শুরু করতে পারব। এটা চালু হলে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা, আইসোলেশন ও অন্যান্য পরিচর্যার খুব ভালো একটি ব্যবস্থা হবে।’

চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসহকারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘চিকিৎসক এবং নার্সদের যাতে কোনো ধরনের ঝুঁকি না থাকে সেই বিষয়টি মাথায় নিয়েই এখানে চিকিৎসা কার্যক্রমের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে প্রটোকলও করা হয়েছে। কিভাবে হাসপাতালে যাবে, কিভাবে রোগী দেখবে। তাদের কিভাবে কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে এসব বিষয়ে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারীরা যেন আক্রান্ত না হয় পালাক্রমে রোস্টারের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখানে প্রাথমিক পরিচর্যা কেন্দ্রের মতো করেছি।

অক্সিজেন সুবিধা থাকবে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তো আছেই, তাদের সাহায্য নেওয়া হবে।’

বসুন্ধরা হাসপাতাল চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগী আনা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা রোগী প্ল্যানিংয়ের ওপর নির্ভর করবে। কত রোগী আক্রান্ত হচ্ছে, কী ধরনের আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তের প্রখরতা কত—সেসব দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ওসমান সরোয়ার বলেন, ‘হাসপাতাল তৈরির ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। গত কয়েক দিন ঝড়বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ ছিল। আশা করছি বাকি ১০ শতাংশ কাজ ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পরিকল্পনা করা হচ্ছে কোথায় অক্সিজেন ও ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা যায়। এখনো এটা আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চাইলেই দ্রুত স্থাপন করা হবে।’ এ সময় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল হামিদ, নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরীসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল চত্বর ঘুরে দেখা গেছে, চিকিৎসক ও নার্স চেম্বারগুলোর কাজ শেষের দিকে। শেষ পর্যায়ে রয়েছে টয়লেট নির্মাণ। বসানো হয়েছে হাসপাতালের এসি, চেয়ার ও রোগীদের শয্যা। এখন শুধু ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে।

প্রাথমিকভাবে এখানে দুই হাজার ৭১ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রয়োজন দেখা দিলে এটিকে পাঁচ হাজার শয্যায় রূপান্তর করা যাবে।

‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’ এই স্লোগানের আলোয় পথ চলা বসুন্ধরা গ্রুপ করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগকালেও দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে এসেছে। দেশে কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী বাড়তে থাকায় সম্প্রতি সরকারকে আইসিসিবিতে পাঁচ হাজার শয্যার একটি অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে পরবর্তী সময়ে এটাকে অস্থায়ী হাসপাতাল বা আইসোলেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন তত দিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।

SOURCE : কালের কণ্ঠ

Also Published In