All news

বসুন্ধরা পেপারের আইপিও লটারির ফল প্রকাশ

বসুন্ধরা পেপারের আইপিও লটারির ড্র অনুষ্ঠিত

বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের আইপিওর শেয়ার বরাদ্দের লটারি ড্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুয়েটের একজন অভিজ্ঞ শিক্ষকের সমন্বয়ে এ লটারি পরিচালিত হয়। কম্পিউটার প্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ড্রতে সাধারণ বিনিয়োগকারী, ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী এবং অনিবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) এই তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৬টি শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়।

গতকাল বুধবার রাজধানীর কুড়িলসংলগ্ন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) গুলনকশা হলে এ লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বসুন্ধরা পেপার মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান বলেন, ‘এটা শুধু পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ নয়। আমরা আমাদের পরিবারের নতুন সদস্যও জোগাড় করছি। বসুন্ধরা পেপার মিলস স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির পর থেকে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এই কম্পানির প্রতি অগাধ আস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে। আপনাদের এই আস্থা ও ভালোবাসার জন্য ধন্যবাদ জানাই।
এ বছর এই কম্পানির ২৫ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে। আশা করছি, বেশ ঘটা করেই এটা আমরা উদ্‌যাপন করতে পারব।’ এ সময় তিনি আইপিওর লটারি অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধি বদরুল ইসলাম শাওন, চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধি আলী রাগীব, সিডিবিএলের প্রতিনিধি আসলাম আরফিন, এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের এমডি মো. ওবাইদুর রহমান এফসিএ, এএফসি ক্যাপিটালের চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া বসুন্ধরা পেপার মিলসের স্বতন্ত্র পরিচালক খাজা আহমেদুর রহমান, কম্পানি সচিব এম নাসিমুল হাই, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মির্জা মুজাহিদুল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সাধারণ বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে মোট ২০০ কোটি টাকা পুঁজিবাজার থেকে উত্তোলনের জন্য গত ৩০ জানুয়ারি বিএসইসি ৬২৬তম সভায় বসুন্ধরা পেপার মিলসের আইপিও আবেদন চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়। এর আগে গত ১৬ অক্টোবর থেকে শেয়ারপ্রতি দর নির্ধারণের বিডিং শুরু হয়ে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে ৭২ ঘণ্টা উন্মুক্ত ইলেকট্রনিক বিডিংয়ে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৮০ টাকায় নির্ধারিত হয়। এরপর যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত কোটার শেয়ারপ্রতি ৮০ টাকা দরে ১২৬ কোটি টাকার শেয়ার বরাদ্দের প্রস্তাবের বিপরীতে ৯৫৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার আবেদন জমা পড়ে। এতে মোট ৪৭৪ জন বিনিয়োগকারীকে ১ কোটি ৫৬ লাখ ২৫ হাজারটি শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়।

আইন অনুযায়ী যোগ্য বিনিয়োগকারীর জন্য নির্ধারিত দর থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে অর্থাৎ ৭২ টাকায় শেয়ার পাবেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এ লক্ষ্যে নির্ধারিত কোটায় ৭২ টাকা দরে ৭৫ কোটি টাকার শেয়ার বরাদ্দের আবেদন গ্রহণের শেষ সময় ছিল গত ৯ মে। এই সময়ের মধ্যে ৭৫ কোটি টাকার শেয়ারের বিপরীতে ৯ গুণেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ ৬৮৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া মোট ২০০ কোটি টাকার শেয়ারের বিপরীতে ১ হাজার ৬৪০ কোটি ৬৫ লাখ টাকার আবেদন জমা পড়ে।

গতকালের লটারির ড্রতে সাধারণ বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে ৭ লাখ ৭০ হাজার ২৭টি আবেদনের মধ্য থেকে ৬২ হাজার ৫০০ লট শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে ৮৩ হাজার ৮৮৪টি আবেদনের মধ্য থেকে ১৫ হাজার ৬২৪ লট শেয়ার এবং এনআরবি ক্যাটাগরিতে ৯২ হাজার ৯৫টি আবেদনের মধ্য থেকে ২৬ হাজার ৪২ লট শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি লটে ১০০টি করে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৬টি শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়। সর্বশেষ শেয়ারটির ‘অড শেয়ার’, এতে ৬৬টি শেয়ার রয়েছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এর ফলে কম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১৪৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বেড়ে ১৭৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকায় উন্নীত হলো। আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ ব্যাবসায়িক কর্মকাণ্ডের সম্প্রসারণ, নতুন যন্ত্রপাতি কেনা ও কম্পানির দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে।

সম্পূর্ণ লটারির ড্র প্রক্রিয়াটি বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপস্থিত বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়। ড্র অনুষ্ঠানের পরপরই বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বরাদ্দের পূর্ণাঙ্গ তালিকা অনুষ্ঠানস্থলে প্রকাশ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ডিএসইর ওয়েবসাইটেও তালিকাটি প্রকাশ করা হয়েছে।

SOURCE : কালের কণ্ঠ