All news

দু’মাসের মধ্যে ফি ছাড়া বাজুসের সদস্য হওয়া যাবে

দু’মাসের মধ্যে ফি ছাড়া বাজুসের সদস্য হওয়া যাবে

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সদস্য ছাড়া কোনো দোকান বা প্রতিষ্ঠান থেকে সোনার গহনা না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে আগামীতে জুয়েলারি শিল্প আরো সমৃদ্ধ হবে। স্বর্ণশিল্পের হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরে আসবে। ডিলারদের কাছ থেকে স্বর্ণের বার কিনে ব্যবসা করতে হবে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। 'মেড ইন বাংলাদেশ' লেখা স্বর্ণালংকার বিদেশে রপ্তানি করে রাজস্ব আয়ে গার্মেন্টশিল্পকেও ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ। আজ রবিবার দুপুরে পিরোজপুর পৌরসভার এসবি কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন পিরোজপুর জেলা কমিটি আয়োজিত এক মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তারা বলেন, দেশের সব স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে এক কাতারে এনে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। বাজুসের সদস্য হলে সেই সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীর সকল দায়-দায়িত্ব নেবে বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটি। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাজুস পিরোজপুর জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষে সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক মনিটরিংয়ের সাবেক সভাপতি ও চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশের স্বর্ণ ব্যবসা একেবারে তলানিতে চলে গিয়েছিল। স্বর্ণ ব্যবসায় সুদিন ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধে দেশের শীর্ষ শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বাজুসের দায়িত্ব নিয়েছেন। ঠিকানাবিহীন বাজুসকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন। বসুন্ধরার মধ্যে সুপরিসর দৃষ্টিনন্দন অফিস দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, "বাজুসের সদস্য ছাড়া কোনো দোকান থেকে ক্রেতাদের সোনার গহনা না কেনার আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন। দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বর্ণ নীতিমালার দাবি ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়োপযোগী স্বর্ণ নীতিমালা করেছেন। স্বর্ণশিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এই নীতিমালা সময়োপযোগী। আমাদের দেশের স্বর্ণকাররা বিদেশে গিয়ে স্বর্ণ তৈরি করে সুনাম কুড়িয়েছেন। আগামীতে 'মেড ইন বাংলাদেশ' লেখা স্বর্ণালংকার বিদেশে রপ্তানি হবে। গার্মেন্টশিল্পের অনেকেই এখন স্বর্ণশিল্পে বিনিয়োগ করছেন। আগামীতে ডিলারদের কাছ থেকে স্বর্ণের বার কিনে অলংকার বানাবেন ব্যবসায়ীরা। এতে সারা দেশে একদরে স্বর্ণ বিক্রি হবে। প্রধানমন্ত্রী এই শিল্পকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ৫% ভ্যাট কমিয়ে ২% করার জন্য এনবিআরকে অনুরোধ করেছেন। বাংলাদেশে জুয়েলারি মেলা কল্পনায়ও ছিল না। বাজুসের দায়িত্ব নেওয়ার পর সভাপতি দেশে প্রথমবারের মতো মেলা করে দেশ-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এর ফলে দেশের স্বর্ণশিল্প জেগে উঠেছে। স্বর্ণ ব্যবসা সুসংহত করতে চলতি বছরের শেষের দিকে ঢাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের মহাসম্মেলন হবে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা সিআইপি মর্যাদা পাবেন। আগামী দুই মাসের মধ্যে বিনা মূল্যে বাজুসের সদস্য হওয়া যাবে। " তিন মাসের মধ্যে জেলায় বাজুসের নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেন তিনি। অনুষ্ঠানের অতিথি বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল মেম্বারশিপের ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, স্বর্ণ ব্যবসা বিশ্ব অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে স্বর্ণ ব্যবসা আলোর মুখ দেখেছে। তার আহ্বানে সারা দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এক কাতারে শামিল হচ্ছেন। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধতার বিকল্প নেই বলে বক্তব্যে বলেন তিনি। অতিথির বক্তব্যে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক মনিটরিংয়ের সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন খোকন বলেন, সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে বাজুসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয়ের সময় গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি এবং মুঠোফোন নম্বর মেমোতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বর্ণশিল্পের উন্নয়নে আগামীতে গোল্ড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাজুস পিরোজপুর জেলার উপদেষ্টা দেলোয়ার হোসেন সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সুরক্ষায় বাজুস কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন। বাজুস জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিপন দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য দেন বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল মেম্বারশিপের সদস্যসচিব মো. রিপনুল হাসান, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক মনিটরিংয়ের সদস্য পবিত্র চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় স্থানীয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা তাদের নানা সমস্যা তুলে ধরে সেগুলো সমাধানের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অতিথিদের ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।   পিরোজপুর জেলা এবং জেলার সাত উপজেলার প্রায় ১০০ স্বর্ণ ব্যবসায়ী এই মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন।  

SOURCE : কালের কণ্ঠ