সোনা, সোনার অলংকার, রুপা বা রুপা অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। মঙ্গলবার দুপুরে বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত বাজুস কার্যালয়ে আয়োজিত প্রাক-বাজেট (২০২৩-২৪) সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাজুস সভাপতি ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসান, সহ-সম্পাদক সমিত ঘোষ অপু, স্ট্যাডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের সদস্য সচিব পবন কুমার আগরওয়াল উপস্থিত ছিলেন।
বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাজুসের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে দেশের সোনা শিল্প বিকাশে গোল্ড রিফাইনারি উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি এ শিল্পে নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ব্যবসাবান্ধব করার প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়া আকরিক সোনা আমদানিতে আরোপিত সম্পূরক শুল্ক (সিডি) ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ ও আংশিক পরিশোধিত সোনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান ১০ শতাংশের পরিবর্তে শুল্কহার ৫ শতাংশ করলে স্থানীয়ভাবে সোনার বার ও হাতে তৈরি অলংকার প্রস্তুতে নতুন বিনিয়োগকারীরা উৎসাহিত হবেন বলে আশা প্রকাশ করা হয়। বাজুসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের ২০২২ সালের প্রতিবেদন মোতাবেক বিশ্ব বাজারে সোনার চাহিদা ছিল ৪ হাজার ৭৪০ টন। এরমধ্যে সোনার অলংকারের চাহিদা ২ হাজার ১৮৯ দশমিক ৮ টন। বাংলাদেশের সোনার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৪০ টন। তবে প্রকৃত চাহিদা নিরূপণে সরকারের সমীক্ষা প্রয়োজন। বৈধভাবে সোনার চাহিদা পূরণ করার ক্ষেত্রে বড় বাধা কাঁচামালের উচ্চমূল্য, অতিরিক্ত উৎপাদন ব্যয়, শিল্প সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম সোনা পরিশোধনাগার স্থাপন করতে যাচ্ছে।
বিশ্ববাজারে আর কিছুদিন পর রপ্তানি হবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ সংবলিত সোনার বার, যা আন্তর্জাতিক বাজারের পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে বড় ভূমিকা পালন করবে সোনা শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে। কিন্তু এ পরিশোধনাগারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির শুল্ক কর ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে প্রাথমিক উৎপাদন ব্যয় অনেক বেশি। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাটহার ও অতিরিক্ত উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। আর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট ছোট জুয়েলারি ব্যবসায়ী। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নীতি নির্ধারকদের ওপর অনেকখানি দায় বর্তায়।
অবাস্তব নীতি প্রণয়ন, শুল্ক নির্ধারণে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গোঁড়ামি, ভ্যাট ও আয়কর কর্মকর্তা কর্তৃক ব্যবসায়ীদের হয়রানি এবং আমদানির ক্ষেত্রে কাস্টমস সদস্যদের ক্ষমতার অপব্যবহার এ শিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি ও আতঙ্কের প্রধান কারণ। এতে সরকার প্রত্যাশিত রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। বাজুস মনে করে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে জুয়েলারি খাতে আরোপিত আয়কর ও ভ্যাটহার কমানো এবং আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। এতে যেমন সরকারের বৈদেশিক আয় আসবে, তেমনি বাড়বে রাজস্ব আয়। বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের আরেকটি খাত তৈরি হবে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাজুসের যেসব প্রস্তাব ॥ বর্তমানে জুয়েলারি ব্যবসার ক্ষেত্রে সোনা, সোনার অলংকার, রুপা বা রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা। ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) যত দ্রুত সম্ভব নিবন্ধনকৃত সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা।
বর্তমানে অপরিশোধিত আকরিক সোনার ক্ষেত্রে আরোপিত সিডি ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আমদানি শুল্ক শর্তসাপেক্ষে ১ শতাংশ নির্ধারণ করা। আংশিক পরিশোধিত সোনার ক্ষেত্রে সিডি ১০ শতাংশের পরিবর্তে আইআরসিধারী এবং ভ্যাট কমপ্লায়েন্ট শিল্পের জন্য শুল্ক হার ৫ শতাংশ করা। হীরা শিল্প বিকাশে কাটিং ও প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রয়োজনীয় আমদানিকৃত রাফ ডায়মন্ডে সহনশীল শুল্ক হার নির্ধারণ করা।
বৈধ পথে মসৃণ হীরা আমদানিতে উৎসাহ জোগাতে ডায়মন্ড অলংকারে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করার জন্য ব্যবসাবান্ধব শুল্ক হার নির্ধারণ। আয়কর আইনে ৪৬-(বিধি) (২) ধারার অধীনে গোল্ড রিফাইনারি বা সোনা পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ বা ট্যাক্স হলিডে দেওয়া। সোনার অলংকার প্রস্তুত করার উদ্দেশে আমদানিকৃত কাঁচামাল ও মেশিনারিজের ক্ষেত্রে সব ধরনের শুল্ক কর অব্যাহতি প্রদানসহ ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ বা ট্যাক্স হলিডে প্রদানের প্রস্তাব।
বৈধভাবে সোনার বার, সোনার অলংকার, সোনার কয়েন রপ্তানি উৎসাহিত করতে কমপক্ষে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করা শর্তে রপ্তানিকারকদের মোট মূল্য সংযোজনের ৫০ শতাংশ হারে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া। সোনা শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে এইচ এস কোড ভিত্তিক ‘অস্বাভাবিক শুল্ক হার’ সমূহ কমিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক হার সমন্বয় করা।
মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০২২ ধারা ১২৬(ক) অর্থ আইন, ২০১৯ (২০১৯ সালের ১০নং আইন) এর ১০২ ধারা বলে, চোরাচালান প্রতিরোধ করতে গিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষসহ সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উদ্ধার করা সোনার মোট পরিমাণের ২৫ শতাংশ সংস্থাসমূহের সদস্যদের পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা। ব্যাগেজ রুলের আওতায় সোনার বার ও অলংকার আনার সুবিধা অপব্যবহারের কারণে ডলার সংকট, চোরাচালান ও মানি লন্ডারিংয়ে কী প্রভাব পড়ছে, তা নিরূপণে বাজুসকে যুক্ত করে যৌথ সমীক্ষা পরিচালনা করা।
SOURCE : দৈনিক জনকণ্ঠA New Dawn for Mirpur Slum Children
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আলোর পথ দেখাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ
Bashundhara Eye Hospital Treats 250 Schoolchildren, Makes them Eye-Conscious
বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় ‘এক হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দিচ্ছে শুভসংঘ’
Now I can be Self-Sufficient, says Masura
‘এহন নিজের পায়ে দাঁড়াবের পারবো’
Bashundhara Group Helps Insolvent Women Attain Self-Reliance
বসুন্ধরা গ্রুপের কল্যাণে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরা
শুভসংঘের খাদ্যসামগ্রী পেল অসহায় পরিবার
মানিকগঞ্জে সাশ্রয়ী মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতাল