All news

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী হাজারো পরিবার

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী হাজারো পরিবার

কোনো সুদ নেই, নেই কোনো সার্ভিস চার্জ বা জামানতের বাধ্যবাধকতা। প্রায় দুই দশক ধরে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের এই মানবিক উদ্যোগে ভাগ্য বদলেছে হাজারো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সহজ শর্তের এই ঋণ প্রকল্পে এরই মধ্যে স্বাবলম্বী হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর এবং কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ২৯ হাজার ১১৮টি পরিবার। 

আজ সোমবার (১১ আগস্ট) জগন্নাথপুর আধুনিক অডিটোরিয়ামে বাঞ্ছারামপুরের ৪১৭ নারীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৭৫ লাখ টাকার ঋণ। এই নিয়ে ৭৮তম বারেরমতো বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও ট্রেজারার ময়নাল হোসেন চৌধুরী এবং বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম নাসিমুল হাই। 

আজ প্রথমবারের মতো ঋণ পেলেন ৯৭ জন, দ্বিতীয়বার পেলেন ৭১ জন, তৃতীয়বার পেলেন ২৪৯ জন। বাঞ্ছারামপুরের এই ৪১৭ জন নারী, যাদের প্রত্যেকের কাঁধে রয়েছে একটি করে পরিবারের দায়িত্ব। নিজেদের পরিবারের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখেন তারা, কিন্তু দারিদ্র্য ছিল সেই স্বপ্নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। ঠিক তখনই তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ পরিচালিত বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন।

১

এই নারীদের অনেকেই অতীতে বিভিন্ন সংস্থা থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। তাই বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের এই সুদ ও সার্ভিস চার্জবিহীন ঋণ তাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এম নাসিমুল হাই বলেন, এলাকার সকলের সহযোগিতায় আমরা ৭৮তম বারেরমতো ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করতে এসেছি। বসুন্ধরা গ্রুপের মাননীয় চেয়ারম্যানের সহায়তায় আজ থেকে ২৫ বছর আগে এই কর্মসূচি চালু হয়েছে। এইটা একটা মডেল কর্মসূচি। এর মাধ্যমে আপনারা স্বাবলম্বী হবেন। আপনাদের দেখে অন্যরাও নিজেদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করবে। যে উদ্দেশ্য নিয়ে আপনারা ঋণ গ্রহণ করছেন আপনাদের সেই উদ্দেশ্য যেন সফল হয়। ২০০৫ সাল থেকে পরিচালিত সুদমুক্ত জামানতবিহীন এই ঋণ প্রকল্পের জন্য শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্চারামপুরই নয়, নবীনগর ও কুমিল্লার হোমনারও হাজার হাজার পরিবার হয়েছে স্বাবলম্বী। সুদ-সার্ভিসচার্জমুক্ত ও জামানতবিহীন এ ধরণের ঋণ দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ।

ময়নাল হোসেন চৌধুরী বলেন, আজকে তৃতীয় বারেরমতো ঋণ নিতে এসেছেন ২৪৯ জন। সাড়ে চার থেকে পাচঁ বছর পর্যন্ত আপনারা আমাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। এর মধ্যে প্রায় সবাই নানা কাজে এই টাকা ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমরা চাই যারা ঋণ নিচ্ছেন তারা এই টাকার সঠিক ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হবেন। আপনারা স্বাবলম্বী হলেই আমরা সার্থক। এমনভাবে নিজেদের গঠন করবেন যেন আর কখনো ঋণ নিতে না হয়। যারা আজকে প্রথমবারের মতো ঋণ নিচ্ছেন, আপনারা আমাদের আইনগুলো মেনে চলবেন। বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন থেকে ঋণ নিয়ে এই টাকা কেউ অন্যায় কোনো কাজে ব্যবহার করবেন না। নিজে কষ্ট করে আয় করবেন, স্বাবলম্বী হবেন। মাদক সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে ব্যবহার করবেন না। এই যে এতগুলো বছর ধরে আমরা ঋণ বিতরণ করছি, আমাদের আদায়ের হার শতভাগ। আপনাদের সকলের উন্নতি ও মঙ্গল কামনা করি। 

ক্ষুদ্র ঋণ পেয়ে বাহের চরের নাজমা বেগম বলেন, আমি এই ঋণ নিয়ে অনেক উপকার পেয়েছি। পাঁচ মেয়েকে আইএ পাস করিয়েছে। এইবার টাকা নিয়ে ছেলের পাসপোর্ট করবো। সেলাই মেশিন কিনেছি আগেরবার। সেলাই কাজ করে মেয়েদের পড়িয়েছি। টাকা জমিয়েছি। এখন পাসপোর্ট করে ছেলেকে বিদেশে পাঠাবো। আমার যে বসুন্ধরার ঋণ নিয়া কত্ত উপকার হইছে বলে বোঝাতে পারবো না। স্থানীয়রা জানান, শুধু সুদমুক্ত ঋণই নয়, বসুন্ধরা গ্রুপ এই অঞ্চলে শিক্ষাবৃত্তি, সামাজিক কর্মকাণ্ডে অনুদান এবং প্রতি শুক্রবার বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবার মতো বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

SOURCE : News 24