বসুন্ধরার প্রচারাভিযান অক্টোবর থেকে

বাসাবাড়িতে রান্নার সময় লিকুইড পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের দুর্ঘটনা এড়াতে গৃহিণীদের মাঝে প্রচারাভিযানের উদ্যোগ নিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড। ভোক্তাদের মাঝে এলপি গ্যাস নিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে ‘নিরাপদ নিবাস’ নামের এই প্রচারাভিযান ১৫ অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী শুরু হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের পক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়। ‘এলপি গ্যাস ব্যবহারের প্রশিক্ষণ নিন, নিরাপদ থাকুন প্রতিদিন’ স্লোগান নিয়ে দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আকর্ষণীয় কর্মসূচির আয়োজন করবে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্থানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড এই সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করছে। সংবাদ সম্মেলনে ‘এলপি গ্যাস : ব্যবহার ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক ধারণাপত্রে এলপি গ্যাসের ব্যবহার ও এর কারিগরি দিক তুলে ধরেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া। তিনি বলেন, এলপি গ্যাসে প্রোপেনের ৫৫ ও বিউটেনের ৪৫ শতাংশের মিশ্রণ থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রোপেন সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ও বিউটেন সর্বনিম্ন ৩০ শতাংশের মিশ্রণও হতে পারে। সাধারণ গ্যাসের নিজস্ব কোনো রং বা গন্ধ নেই। সাধারণ গ্যাস বায়ু অপেক্ষা হালকা হওয়ায় এটি বাতাসে উড়ে যায়। তবে এলপি গ্যাসে প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ থাকায় এটি বাতাসের তুলনায় ভারী। ফলে বাসাবাড়ির রান্নাঘরের নিচে এটি জমাটবদ্ধ হয়ে থাকে। জমাটবদ্ধতা দুর্ঘটনা সৃষ্টি করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই গ্যাসের উপস্থিতি নির্ণয় করার জন্য এটির সঙ্গে ইথাইল প্রোপেন যোগ করা হয়। ফলে গ্যাসের গন্ধ নাকে আসে। এ থেকে গ্যাসের সিলিন্ডারে লিকেজ থাকলে বোঝা যায়। এ সময় নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। এরপর সাবানের ফেনার মাধ্যমে লিকেজটির অবস্থান নির্ণয় করতে হবে। নিরাপদ সিলিন্ডার ব্যবহারের জন্য গৃহিণীদের কয়েকটি সাধারণ বিষয় লক্ষ করার আহ্বান জানান সুলতানা রাজিয়া। তিনি বলেন, ‘সব সময় সিলিন্ডারের রাবারের পাইপটি আপনার চোখের সামনে রাখবেন। এটি যাতে কোনোভাবে বেশিক্ষণ তাপের খুব কাছাকাছি না থাকে, সেটিও লক্ষ করতে হবে। ঘরের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সিলিন্ডারের চাপও বাড়ে। এ জন্য সব সময় ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখা উচিত। কারণ আমাদের সামান্য ভুলের কারণে এটি যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।’
এস টি জামিল বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের কতটুকু গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত হবে, তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। কারণ প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারের নামে অপব্যবহার বেশি হয়ে আসছে। গ্যাস চুরি ছাড়াও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে সরকারের ভর্তুকি কোনো কাজে আসছে না। বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের জিএম (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, পাঁচ বছর পর পর বসুন্ধরার সিলিন্ডার রিটেস্ট করা হয়। যদি কোনো সিলিন্ডারে লিকেজ থাকে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সেটি নষ্ট করে দেওয়া হয়। ফলে বসুন্ধরার টেকসই সিলিন্ডার ব্যবহার করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কম দামে গ্যাস সরবরাহ করছে। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে। আর বসুন্ধরার সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ী থেকে সাবধান থাকার জন্য ভোক্তাদের অনুরোধ জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের গণসংযোগ উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) খন্দকার আব্দুল ওয়াহেদ, হেড অব ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং এম এম জসীম উদ্দিন, বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মীর টি আই ফারুক রিজভী প্রমুখ।