বরিশাল নৌবন্দরে বসুন্ধরা ড্রেজিংয়ের সফল খননকাজ

নাব্যতা সংকট দূর করতে বরিশাল নৌবন্দর (লঞ্চঘাট) এলাকায় ড্রেজিং কাজ চলছে। দেশের অন্যতম বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ড্রেজিং কম্পানি লিমিটেড বরিশাল লঞ্চঘাটের সম্মুখের খননকাজ প্রায় সম্পন্ন করেছে। ফলে অভ্যন্তরীণ ও ঢাকা-বরিশাল রুটের কোনো লঞ্চই আর ঘাটে ভিড়তে সমস্যায় পড়বে না বলে জানিয়েছে সরকারের ড্রেজিং বিভাগ। এদিকে বরিশাল লঞ্চঘাট এলাকার খননকাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকরা। তবে লঞ্চঘাট এলাকার নাব্যতা সংকট স্থায়ীভাবে দূর করতে আরো খনন প্রয়োজন বলে তাঁরা মত দিয়েছেন।
বরিশাল নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি একিন আলী মাস্টার বলেন, ‘নাব্যতা সংকটের কারণে একতলা ও দোতলা লঞ্চ ঘাটে ভেড়ানোই দায় ছিল। এর আগে বিভিন্ন সময় ড্রেজিং করা হলেও পলি জমে নৌ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছিল। তবে এবার বসুন্ধরা ড্রেজিং যে খননকাজ করেছে তা সন্তোষজনক। এখন লঞ্চ ভেড়াতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আশা করি, নাব্যতা সংকটও আগের মতো থাকবে না।’
বসুন্ধরা ড্রেজিং কম্পানী লিমিটেডের প্রধান প্রকৌশলী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, বরিশাল-ঝালকাঠি-বরগুনা-পাথরঘাটা এলাকায় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা সংকট দূরীকরণে দুটি ড্রেজার ২০১৪ সালের জুন থেকে খননকাজ করে আসছে। বরিশাল লঞ্চঘাট এলাকায় ওই প্রকল্পের কিছু অংশের কাজ করা হচ্ছে। চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর থেকে লঞ্চঘাট এলাকায় খননকাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে লঞ্চঘাট এলাকার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তিনি বলেন, ‘খননকাজ খুব সুচারুভাবে করা হয়েছে। আশা করি, নাব্যতা সংকট থাকবে না। এমনকি নৌবন্দরে লঞ্চ ভেড়াতেও কোনো সমস্যা হবে না।’
বিআইডাব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, আর দু-এক দিনের মধ্যে লঞ্চঘাট এলাকায় নদীর খননকাজ শেষ হবে। ড্রেজিং ওয়ার্ক বাই কাটার সাকশন ড্রেজার ফর ইমপ্রুভিং নেভিগ্যাবিলিটি অব দ্য বরিশাল-ঝালকাঠি-বরগুনা-পাথরঘাটা রিভার রুট প্রজেক্টের আওতায় বসুন্ধরা ড্রেজিং এবার নৌবন্দর এলাকায় প্রায় ৪৫ হাজার ঘনমিটার মাটি কেটেছে। আর এ খননের ফলে লঞ্চঘাট এলাকার নাব্যতা সংকট অনেক কমে গেছে। এ কারণে একতলা কিংবা দোতলা লঞ্চ ঘাটে ভেড়াতে কোনো সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান।
বরিশাল নৌবন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বরিশাল লঞ্চঘাট এলাকার খননকাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এবার যে ড্রেজিং হয়েছে তাতে আশা করি, আর কোনো লঞ্চকে নৌবন্দরে ভেড়াতে সমস্যায় পড়তে হবে না চালকদের। কারণ বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার বেশি মাটি কাটা হয়েছে এবং মানসম্মত ড্রেজিং কম্পানি কাজটি করেছে।’
সুন্দরবন নেভিগেশন কম্পানির পরিচালক সাইদুর রহমান রিন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, শীত মৌসুমে বন্দর এলাকায় নাব্যতা সংকটের কারণে লঞ্চ ভেড়াতে সমস্যা হয়। এ বছর শীত মৌসুমের আগেই খননকাজ শেষ হওয়ায় সমস্যা আর থাকবে না। তা ছাড়া এবার উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খননকাজ হওয়ায় নাব্যতা সংকট আর থাকবে না। তবে লঞ্চঘাট এলাকার নাব্যতা সংকট স্থায়ীভাবে দূর করতে আরো খনন প্রয়োজন বলে তিনি জানিয়েছেন।