ট্রেবলের স্বপ্নে নতুন শেখ রাসেল

দেশীয় বিজ্ঞাপন হলো শেখ জামাল-আবাহনী ভেঙে শক্তিশালী হয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র। বিদেশি বিজ্ঞাপন হলো আইএসএল মাতানো তারকা ফিকরু যোগ হয়েছেন। এতেই যেন শিরোপার রং ধরেছে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের ভাবমূর্তিতে। তাতে একটি-দুটি শিরোপা নয়, রীতিমতো ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন দেখছেন কোচ-কর্মকর্তারা।
শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ইনচার্জ সালেহ জামান সেলিম স্বপ্নের কথা বলেই ফেলেছেন, ‘দেশি-বিদেশি মিলিয়ে আমরা ভালো একটি দল গঠন করেছি। এই দল ২০১২-১৩ মৌসুমের মতোই শক্তিশালী হয়েছে, সেই দলের মতো এটিও ট্রেবল জিতবে আশা করি।’ তিন বছর আগে ট্রেবলের পর গত দুই মৌসুমে তারা কোনো ট্রফি জেতেনি। গতবার ভালো দল গড়েও লিগে রানার্স-আপ হয়েছে। এবার শীর্ষে ওঠার লক্ষ্যে প্রথমেই শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র হানা দিয়েছে চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবে। নিয়েছে দুই মিডফিল্ডার জামাল ভুঁইয়া ও মোনায়েম খান এবং দুই ফরোয়ার্ড সাখাওয়াত হোসেন ও আলমগীর কবির রানাকে। ঢাকা আবাহনী থেকে নিয়েছে গোলরক্ষক জিয়াউর রহমান, দুই ডিফেন্ডার নাসিরুল ইসলাম ও নাহিদুল ইসলাম এবং দুই মিডফিল্ডার শাহেদুল আলম ও আব্দুল বাতেনকে। অভিজ্ঞ গোলরক্ষক বিপ্লব ভট্টাচার্য যোগ দিয়েছেন ব্রাদার্স ছেড়ে, এ ছাড়া তারা আরো আটজনকে নিয়েছে অন্যান্য ক্লাব থেকে। আছেন গতবারের বিদেশি মিডফিল্ডার ক্যামেরুনের ইকাঙ্গা, আছেন স্থানীয় জাহিদ হাসান, মিঠুন চৌধুরী, আতিকুর রহমানরাও। এরপর আইএসএল তারকা স্ট্রাইকার ফিকরু তেফেইরা যোগ দেওয়ার পর শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের চেহারা বদলে গেছে। শিরোপার স্বপ্নে লেগেছে জোর হাওয়া। ‘আমি সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব শেখ রাসেলকে শিরোপা উপহার দিতে। এখানকার পরিবেশ এবং সহ-খেলোয়াড় সবই আমার জন্য নতুন, আস্তে আস্তে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি’, বলেছেন এই মুহূর্তে দেশের ফুটবলের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ইথিওপিয়ান স্ট্রাইকার ফিকরু।
ট্রেবলের মৌসুমে সনি নর্দে-মামুনুলরা খেলেছেন মাঠে, আর বাইরে ছিলেন মূল কারিগর মারুফুল হক। এবারও এই কোচ নতুন দল নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখছেন, ‘পাঁচ সপ্তাহ প্র্যাকটিস হয়ে গেছে। খেলোয়াড়রা পরিশ্রম করছে, তারাও দারুণ কিছু করার জন্য তৈরি হচ্ছে। তবে আমার আক্ষেপ হলো সেন্ট্রাল ডিফেন্সে কোনো প্রতিষ্ঠিত ফুটবলার নেই। ভালো বিদেশি দিয়ে জায়গাটা পূরণ করতে হবে।’ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি ছিলেন জাতীয় দলের দায়িত্বে, ভারতে চরম ভরাডুবির পর এই কোচ খেলোয়াড়দের মানসিকতাকে দুষেছিলেন। এখন সেই ফুটবলারদের নিয়েই শুরু হচ্ছে তাঁর নতুন মিশন। তিনি প্র্যাকটিস মাঠে চেষ্টা করছেন, তবে এই মানসিকতার পরিবর্তন রাতারাতি হবে মনে করেন না। বিখ্যাত ফুটবল কোচ বেকেলহফটের উদ্ধৃতি টেনে তিনি বলেছেন, ‘১৯৭৮ সালে জার্মান কোচ বেকেলহফট বাংলাদেশ দলকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতায় বলেছিলেন, মাঠে অনেক সোনার খনি আছে। এখনো আমাদের ফুটবলার মাথা নিচু করে সেই খনির খোঁজ করে। মাথা উঁচু করে, পুরো মাঠ দেখে ফুটবল খেলাটাই শেখেনি আমাদের ফুটবলাররা।’ তবে এই দল নিয়ে তিনি বড় সাফল্য আশা করছেন। আরো তিনটি বড় দল লড়াইয়ে থাকলেও মারুফুল এগিয়ে রাখছেন নিজের দলকে।
তবে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র শুধুই শিরোপার জন্য দল গড়েনি। গড়েছে ফুটবলের জনপ্রিয়তা ফেরানোর জন্যই। ক্লাবের পরিচালক মাকসুদুর রহমান তেমনটাই জানিয়েছেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজমেন্ট চেষ্টা করেছে একটা ভালো ফুটবল দল গড়তে। দেশের ফুটবলকে সোনালি দিনে ফিরিয়ে নেওয়াটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ জন্যই শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের পক্ষ থেকে কাজ করে যাচ্ছি।’